ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে যাওয়ার শখ রয়েছে তরুণের। পর্যটনকেন্দ্রে গিয়ে ভিডিয়ো তুলে তা সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্টও করেন তিনি। মে মাসে মেঘালয়ের রুট ব্রিজে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে রাজা রঘুবংশী এবং সোনমের ভিডিয়ো তুলে ফেলেন তিনি। তরুণের দাবি, সম্ভবত এই ভিডিয়োয় সোনম এবং রাজাকে শেষ বার একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। তিন জন তরুণের ট্রেকিং করার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তরুণ দাবি করেছেন, সেই তিন জন নাকি সোনমের নিয়োগ করা ভাড়াটে খুনি। সমাজমাধ্যমের পাতায় এই ভিডিয়োগুলি পোস্ট করার পর তা নেটপাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
‘এম_দেবসিংহ’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ইনস্টাগ্রামের পাতায় একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। যিনি ভিডিয়োগুলি তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন, তিনি একজন নেটপ্রভাবী। তরুণের দাবি, ২৩ মে তিনি মেঘালয়ের ডবল ডেকার রুট ব্রিজে ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন। ঘড়িতে তখন সকাল ৯টা ২৫ মিনিট। ট্রেকিং শেষ করে নামছিলেন তিনি। উল্টো পথে তিন জন তরুণ সেই সময় উপরের দিকে ট্রেক করে উঠছিলেন। তার ঠিক ২০ মিনিট পর সোনম এবং রাজাকে ট্রেক করে উপরে উঠতে দেখা যায়। ট্রেকিং করার সময় ভ্লগ বানানোর জন্য প্রচুর ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করছিলেন তরুণ। কাকতালীয় ভাবে তাঁদের ভিডিয়োও তরুণের ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামীকে খুন করার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সোনম এবং রাজা প্রসঙ্গে জানতে পারেন তরুণ। তার পর ঘুরতে যাওয়ার ভিডিয়োগুলি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছিলেন তিনি। ভিডিয়োগুলি ভাল করে লক্ষ করে তরুণ দেখেন যে, সেখানে সোনম এবং রাজার ট্রেকিং করার দৃশ্য ধরা পড়েছে। সোনমের পিছন পিছন ট্রেকিং করতে দেখা গিয়েছে রাজাকে। তরুণের দাবি, সোনমের পরনে যে পোশাক ছিল, সেটাই রাজার দেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল। সোনম এবং রাজার আগে একই জায়গা দিয়ে ট্রেকিং করতে দেখা গিয়েছে তিন জন তরুণকে। প্রভাবীর দাবি, এই তিন তরুণই রাজার খুনের সঙ্গে জড়িত। ভিডিয়োগুলি পোস্ট করে তরুণ জানান যে, পুলিশকে সব রকম ভাবে সহায়তা করতে প্রস্তুত তিনি।
পুলিশ সূত্রে দাবি, স্বামীকে খুন করানোর জন্য ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন সোনম। ইনদওরের বাসিন্দা রাজা এবং সোনমের বিয়ে হয়েছিল গত ১৯ মে। বিয়ের পরের দিনই মেঘালয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন নবদম্পতি। ২৩ মে সোহরার একটি হোমস্টেতে শেষ বার তাঁদের দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। ১১ দিন পর খাদ থেকে উদ্ধার হয়েছিল রাজার দেহ। দেহ উদ্ধারের সময় সেখানে রক্তমাখা দা এবং বর্ষাতিও পাওয়া গিয়েছিল। রাজার মৃতদেহ পাওয়া গেলেও তাঁর স্ত্রী সোনমকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ জানিয়েছিল, গত ২৩ মে দুপুর সওয়া ১টায় আত্মীয়দের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল সোনমের। মনে করা হচ্ছিল, দুষ্কৃতীদের কবলে পড়েছেন তিনিও।
এমনকি, তাঁকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। যে জায়গা থেকে সোনম এবং রাজা নিখোঁজ হয়েছিলেন, সেখান থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত খুব দূরে নয়। রাজা-সোনমের পরিবারের তরফেও অপহরণের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এমনকি, তদন্ত নিয়ে পরিবারের সদস্যেরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। অবশেষে ১৬ দিন পর সোনমের খোঁজ পাওয়া যায়। উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের নন্দগঞ্জ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন সোনম। স্বামীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।