ছবি: প্রতীকী।
১৭ বছর বয়সে প্রথম দেখা, বন্ধুত্ব। তার ঠিক ১৪ মাসের মাথায় দুই বন্ধু জানতে পারলেন এক নির্মম সত্যি। সেই সত্যিটা দুই বন্ধুর পরিবারই সযত্নে গোপন করে রেখেছিল সচেতন ভাবেই। পরে অবশ্য সেই সত্যিটা প্রকাশ্যে আনে দু’জনের পরিবারই। উত্তর চিনের হেবেই শহরের বাসিন্দা দুই তরুণী ঝাং গুওক্সিন এবং হাই চাও। দু’জনেই কৈশোরের শেষ পর্বে একে অপরের বন্ধু হয়ে ওঠেন। তাঁদের প্রথম সাক্ষাতের ঘটনাও চমকপ্রদ ছিল। সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ঝাং ও হাই একই শহরে থাকতেন কিন্তু ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত একে অপরের সম্পর্কে জানতেন না। তাদের প্রথম দেখা হয় যখন হাইয়ের এক সহপাঠী বলেন যে কাছের একটি পোশাকের দোকানের এক কর্মীকে অবিকল হাইয়ের মতোই দেখতে।
উৎসুক হয়ে হাই ঝাঙের সঙ্গে দেখা করতে এসে চমকে যান। নিজের প্রতিচ্ছবিকেই বাস্তবে হাঁটতে, চলতে, কথা বলতে দেখেন হাই। একে অপরকে জানার পর বুঝতে পারেন যে তাঁদের জন্মদিনও একই। ছোটবেলায় কাছাকাছি সময়ে দু’জনেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি তাঁদের গলার স্বর এবং চুলের ধরনও একই ছিল। খাবারের পছন্দের দিক থেকেও দুই বন্ধুর ভীষণ মিল। উভয় পরিবারই জানত যে তাঁরা যমজ। তারা ভয় পেয়েছিল যে মেয়েরা হয়তো তাঁদের জন্মদাতা বাবা-মাকে খুঁজে করতে চাইবেন। কারণ তাঁদের দু’জনকেই দত্তক নিয়েছিল দু’টি ভিন্ন পরিবার।
জন্মের মাত্র ১০ দিন পর আলাদা হয়ে যান ঝাং ও হাই। তাঁদের মা-বাবা তাঁদের লালনপালন করতে অসমর্থ হওয়ায় তাদের দু’টি ভিন্ন পরিবারে দত্তক নেওয়া হয়। দত্তক নেওয়ার একটি শর্ত ছিল উভয় পরিবারকে একই শহরের বাসিন্দা হতে হবে। সেই শর্ত মেনেই দুই যমজ বোন একই শহরে দু’টি আলাদা পরিবারে বড় হতে থাকেন। ভাগ্যের ফেরে তাঁরা আবার মিলিত হন। প্রথমে বন্ধু ও পরে রক্তের সম্পর্ক আবিষ্কার করেন। সত্যিটা জানার পরও কাকতালীয় ঘটনা ঘটতে থাকে। দুই বোন একসঙ্গে পরিকল্পনা না করেই কাছাকাছি আবাসনে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। তাঁদের ১৩ বছর বয়সি সন্তানেরা একই স্কুলে পড়ে। একে অপরকে খুঁজে পাওয়ার ২০ বছর পূর্ণ করেছেন হাই ও ঝাং। এই সময়ের মধ্যে তাঁরা জন্মদাতার খোঁজ করেননি।