—প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘকাল ধরে মানসিক অবসাদের শিকার ছিলেন। দুই বোনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শোকে আরও ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। বেঁচে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাই পরিবারকে মিথ্যা কথা বলে মৃত্যুর পথে পা বাড়িয়ে দেন। স্বামী এবং কন্যাকে জানিয়ে গিয়েছিলেন যে, তিনি বিদেশে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। কিন্তু বিদেশে গিয়ে নিষ্কৃতি মৃত্যুর পথ বেছে নিলেন তিনি। মারা যাওয়ার এক মাস পর সেই খবর জানতে পারল তাঁর পরিবার।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ৫৮ বছর বয়সি মহিলার নাম মরিন স্লগ। আয়ারল্যান্ডের কাভানের বাসিন্দা তিনি। স্বামীকে নিয়ে সংসার ছিল তাঁর। মরিনের বিবাহিতা কন্যা আলাদা ঠিকানায় থাকতেন। কয়েক মাস আগে মরিন তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন। লিথুয়ানিয়ায় ঘুরতে গিয়ে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন মরিন। এমনটাই জানত তাঁর পরিবার।
৮ জুলাই তিনি ভ্রমণের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি লিথুয়ানিয়া না গিয়ে চলে গিয়েছিলেন সুইৎজ়ারল্যান্ড। আসলে, প্রথম থেকেই সুইৎজ়ারল্যান্ড যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মরিন। এক বিশেষ কারণে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়িতে সে কথা গোপন করেছিলেন মরিন।
মরিনের কন্যা মেগান রয়্যাল জানান, তাঁর মা সুইৎজ়ারল্যান্ডে গিয়ে নিষ্কৃতি মৃত্যুর মাধ্যমে জীবন শেষ করেছেন। সে কথা এক মাস পর মরিনের এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে পারেন তিনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মেগান বলেন, ‘‘বুধবার রাত ১০টা পেরিয়ে গিয়েছিল। আমি আমার মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলাম তখন। হঠাৎ দেখি, মায়ের এক বান্ধবী আমায় হোয়াট্সঅ্যাপ করেছেন। তিনিই আমায় জানান যে, মা এক মাস আগে মারা গিয়েছে। আমার মনে হচ্ছিল, পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। মা তো ঘুরতে গিয়েছিল। শুনলাম, মা নাকি লিথুয়ানিয়ায় যায়নি। তিনি সুইৎজ়ারল্যান্ডে গিয়ে নিষ্কৃতি মৃত্যুর মাধ্যমে জীবন শেষ করে দেন। তাঁর দুই বান্ধবীকে আগে থেকে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন মা। কিন্তু বাড়ির কাউকে এ বিষয়ে কিছুই বলেনি।’’
পরে খোঁজ নিয়ে মেগান জানতে পারেন যে, মরিন কয়েক মাস আগে নিষ্কৃতি মৃত্যুর জন্য আবেদন জানিয়ে ১৭.৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। মেগান তাঁর মায়ের খোঁজ নিলে সংস্থার তরফে জানানো হয় যে, ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে মরিনের চিতাভস্ম তাঁদের পোস্ট করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে চিতাভস্ম পৌঁছোলে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে মরিনের পরিবার।