প্রতীকী ছবি।
সুন্দরবনের পাখিরালয়ের রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে পর্যটকদের অভিযোগ রয়েছে। রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে রাজ্য পর্যটন দফতর এই প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করার অনুমতি দিয়েছে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত পূর্ত দফতর ওই কাজ করবে।।
সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে পর্যটন দফতর ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পূর্ত দফতরকে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হবে বলেও দফতরের এক কর্তা জানান। পরিবেশগত কারণেই প্রকল্পটি দীর্ঘায়িত হয়েছে বলেও তিনি জানান।
পাখিরালয়ে রাস্তা তৈরিতে সমস্যা কোথায় হচ্ছিল?
পরিবেশকর্মীরা জানান, ওই অঞ্চলে পিচের রাস্তা তৈরিতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু পাখিরালয়ের ভেতরে কোনওভাবেই আগুন জ্বালিয়ে পিচ গলানো যাবে না। তাই বাইরে থেকে পিচ গলিয়ে নিয়ে এসে রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা হয়।
প্রাথমিকভাবে এই নিয়েই সমস্যায় পড়তে হয় রাজ্য পূর্ত দফতরকে। দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, সিদ্ধান্ত হয়েছে বাইরে থেকে পিচ গলিয়ে নৌকায় মাতলা নদী পেরিয়ে তা পাখিরালয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু নদীতে জোয়ার-ভাটার কারণে অসুবিধা দেখা দিয়েছে। জোয়ারের সময় নৌকো করে গলানো পিচ
নিয়ে এলেও ভাটার সময় তা নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে দিনের বেলায় ভাটা হলে কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে। রাতে আলো জ্বেলে কাজ করা সম্ভব নয়। সেই কারণে এই প্রকল্প শেষ হতে দেরি হচ্ছে। তবে পাখিরালয়ের প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তাই এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। রাস্তা ৩.৭৫ মিটার চওড়া হবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানান।
পরিবেশকর্মী সুদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এখানে লোকালয় রয়েছে। রাস্তার অবস্থাও ভাল নয়। সুতরাং এলাকার উন্নয়ন ও বাসিন্দাদের সুবিধাদের জন্য পিচের রাস্তা ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই। তবে যতটা সম্ভব পরিবেশ বিধি মেনেই রাস্তা তৈরি করতে হবে।’’ পাখি বিশারদ কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আশির দশকের শেষে ঝড়ে পাখিরালয়ে বেশ কিছু গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক পাখি এখান থেকে চলে গিয়ে অন্য জায়গায় গিয়ে বাসা বেঁধেছিল। তারপর থেকেই এই দ্বীপে পাখির সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে গিয়েছে। এখন শামুকখোল, পানকৌড়ি, বক দেখা যায়। অন্য পাখিরা অবশ্য বাস করছে।’’
তিনি জানান, পাখি ছাড়াও সুন্দরবন ঘুরতেও অনেক পর্যটক এখানে আসেন। বেশিরভাগ রাস্তাই এখানে ইটের। বর্ষার সময়ে চলাফেরা করাই সমস্যা। অনেকদিন ধরেই পর্যটক এবং বাসিন্দাদের পিচের রাস্তার দাবি ছিল।