বারুদে বিস্ফোরণ ঘটায় ঝলসে গিয়ে গুরুতর জখম হল দুই কিশোর। প্রতীকী ছবি।
কালীপুজোয় ফাটানো আধপোড়া ফুলঝুড়ি, রংমশাল, রকেট, কালীপটকা জড়ো করেছিল ওরা। ঠিক করেছিল, বাজিগুলো থেকে বারুদ বার করে ফের চকলেট বোমা বানিয়ে শনিবার রাতে কালীপুজোর বিসর্জনে সেগুলি ফাটাবে। তবে জড়ো করা বারুদে বিস্ফোরণ ঘটায় ঝলসে গিয়ে গুরুতর জখম হল দুই কিশোর। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডের একটি বস্তির ঘরে ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের নাম সুজয় হালদার (১৩) ও বিকাশ হালদার (১৮)। বিকাশের আঘাত গুরুতর। আহতদের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয় তার কাকিমার বাড়ি গোবিন্দ খটিক রোডে বেড়াতে এসেছিল। বিকাশ স্থানীয় বাসিন্দা। সুজয়ের কাকিমা নিশা হালদার বলেন, ‘‘আমরা তখন কেউ বাড়ি ছিলাম না। পাশের একটা প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ একটা প্রচণ্ড জোরে শব্দ শুনে চমকে উঠি। আমাকে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘তোর বাড়িতে আগুন লেগেছে!’ তিনি ঘরে এসে দেখেন সুজয় ও বিকাশ ঘরের মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে। দু’জনেরই শরীর অনেকটা ঝলসে গিয়েছে।
যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে তার খুব কাছেই থাকেন বিকাশের দিদি মৌসুমি মণ্ডল। তিনিও বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ছুটে আসেন। মৌসুমি বলেন, ‘‘ভাইয়ের পা ঝলসে গিয়েছে। হাতের চামড়া ঝুলছিল। সেই অবস্থায় ওদের প্রথমে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পর ওদেরকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।’’ এলাকার বাসিন্দারা জানান, অপেক্ষাকৃত কম জখম সুজয় তাঁদের জানিয়েছে, অনেকটা বারুদ জড়ো করে একটা কাপড়ের পুটুলির মধ্যে পুরে সেখান থেকে সুতলি বার করার জন্য একটা ফুটো করে সুতলিকে পেরেকের সাহায্যে ঢোকাচ্ছিল। সেই সময়েই বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, বিকাশের হাতের দু’টো আঙুল উড়ে গিয়েছে। ঝলসে গিয়েছে হাত। পুড়ে গিয়েছে চুলও। যে ঘরে বাজি বানানো হচ্ছিল সেই ঘরটিকে সিল করে দিয়েছে থানা। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বারবার প্রচার সত্ত্বেও শব্দবাজি এবং বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি নিয়ে জনমানসে যে সচেতনতা তৈরি হয়নি এই ঘটনা তারই প্রমাণ।