কাকদ্বীপে দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র।
এখনও উৎসবের মরসুম চলছে। তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার দু’টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তিন জনের। আহত হয়েছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে ভোরবেলা। কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট থানার ধলের খাল এলাকায় ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছে ধাক্কা মারে একটি বাস। মৃত্যু হয় এক জনের। গুরুতর আহত হন পাঁচ জন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম গোরাচাঁদ চক্রবর্তী (৫১)। তিনি হুগলির জাঙ্গিপুরের বাসিন্দা। আহতদের চিকিৎসা চলছে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে হাওড়া থেকে বকখালিগামী বাসটি প্রায় ৪৫ জন পর্যটক নিয়ে রওনা হয়েছিল। ভোর বেলা সেটি ধলের খালের কাছে পৌঁছয়। ভোরবেলা ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে চলার সময়ে বাসের চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলে অনুমান পুলিশের। বাসটি রাস্তার বাঁ পাশের গাছে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই মারা যান চালকের পাশের আসনে বসে থাকা গোরাচাঁদবাবু।
স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘সকালে বিকট শব্দ পেয়ে এলাকায় গিয়ে দেখি, কয়েকটি গাছ উল্টে দিয়ে বাসটি পড়ে রয়েছে। কয়েকজন যাত্রী যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। আমরা আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’’ এ দিন বিকেলের পরে বাসটিকে রাস্তা থেকে সরানো হয়।
বুধবার রাতে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক দম্পতির। দুর্ঘটনাটি ঘটে হাসনাবাদের ভেবিয়া শ্মশানের কাছে মালঞ্চ রো়ডে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম উমেশ মণ্ডল (৫৬) এবং অঞ্জনা মণ্ডল (৪০)। দুর্ঘটনার পরে ট্রাকে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। রাস্তা অবরোধ হয়। পরে বসিরহাটের এসডিপিও, আইসি এবং হাসনাবাদের ওসি বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। লরিটি আটক করা হয়েছে। চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা হয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় মোটরবাইক করে বসিরহাটের দিক থেকে মালঞ্চ রোড দিয়ে ফিরছিলেন উমেশবাবু। মোটরবাইকের পিছনে ছিলেন তাঁর স্ত্রী অঞ্জনাদেবী। রাত ৭টা নাগাদ হাসনাবাদের শ্মশান মোড়ের কাছে একটি ইট বোঝাই লরি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মোটরবাইকটির পিছনে ধাক্কা মারে। রাস্তার মধ্যেই ছিটকে পড়েন দু’জন। দু’জনেই লরির চাকায় পিষ্ট হন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুর্ঘটনার পরে উমেশবাবুর মৃত্যু হলেও তাঁর স্ত্রী বেঁচে ছিলেন। সময় মতো পুলিশের গাড়ি কিংবা অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হলে তিনি বেঁচে যেতে পারতেন। যদিও পুলিশের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ঘটনাস্থলে ভিড় করে থাকার জন্যই ওই মহিলাকে গাড়িতে তুলতে সামান্য দেরি হয়। তাকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।