৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক নিয়ে বৈঠক ‘অনিচ্ছুক’দের সঙ্গে

জমি-জটে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পরে এ বার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ নিয়ে ‘অনিচ্ছুক’দের সঙ্গে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা শুরু হল।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:৩৪
Share:

পিছু হটছে আস্ত বাড়ি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

জমি-জটে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পরে এ বার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ নিয়ে ‘অনিচ্ছুক’দের সঙ্গে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা শুরু হল। আমডাঙা লাগোয়া যে সব মৌজার দোকানদার, বাসিন্দারা রাস্তা চওড়া করার কাজে বাধা দিচ্ছেন, সোমবার, এই প্রথম তাঁদের নিয়ে বৈঠক করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকেরা। এ ভাবে ধাপে ধাপে আলোচনা চলবে বলে মঙ্গলবার জানান জেলাশাসক মনমীত নন্দা। প্রথম বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলেও দাবি তাঁর।

Advertisement

চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় মাত্র চার কিলোমিটার দূরত্বে বাধার জন্যই থমকে রয়েছে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার ৪৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। ওই এলাকায় মাপজোক করতে গিয়ে গত পাঁচ বছরে অন্তত চোদ্দো বার বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন সরকারি কর্মীরা। যাঁরা সরকার ও এলাকাবাসীর মধ্যে মধ্যস্থতা করতে পারতেন, শাসক দলের সেই নেতা-মন্ত্রীরাও হাত গুটিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তা হলে এ বার কী হল?

তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলছেন, ‘‘আমরা হাত গুটিয়ে বসে ছিলাম না। মানুষকে বোঝাতে চাইছিলাম, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার সবাইকে নিয়ে উন্নয়নের পথে এগোতে চায়। ন্যায্য মূল্য ছাড়া কারও স্বার্থহানি করতে এ সরকার চায় না। সেই বোঝানোর প্রক্রিয়াটাই সময়সাপেক্ষ ছিল।’’

Advertisement

বৈঠকে হাজির ছিলেন রায়পুর মৌজার উনিশ জন বাসিন্দা। যাঁদের কেউ জমির বিনিময়ে প্রশাসনের দেওয়া চেক পেয়েছেন, কিন্তু বাড়তি টাকার দাবিতে এখনও চেক ভাঙাননি। কেউ কেউ চেকই নেননি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) বিজিৎ ধর জানান, জমির দাম ধার্য করার ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে কতটা, কী করা সম্ভব তা জানানো হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘জমি অধিগ্রহণের নোটিস আগে দেওয়া হলেও কেউ-কেউ জমির জন্য এখনকার দর চাইছেন। সে সব নিয়ে কথা, সরকারি আইন কী আছে— তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’’

রাস্তা চওড়া করতে গেলে ওই চার কিলোমিটার দূরত্বে শ’পাঁচেক বাড়ি, দোকান এবং হাট ভাঙা পড়বে। স্থানীয় ‘ভূমি ও ব্যবসা রক্ষা কমিটি’র সম্পাদক সুব্রত ঘোষ বলেন, “আমাদের একমাত্র দাবি, যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”

তবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে জমি অধিগ্রহণ আধিকারিক আব্দুল হালিম বলেন, ‘‘যে সব এলাকায় জমি অধিগ্রহণে জট ছিল, তার অনেকটা কেটেছে। মাপজোকের কাজও প্রায় শেষ। ৮০ শতাংশ মানুষ টাকা পেয়েছেন। যাঁরা বাকি রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনার জন্য এই বৈঠক।’’

৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক (এয়ারপোর্ট থেকে পেট্রাপোল) সম্প্রসারণ নিয়েও সোমবার একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার রাজীব চট্টরাজ জানান, বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার এবং বনগাঁ, হাবরা, অশোকনগর, বারাসতের কাজিপাড়া এলাকায় রেললাইনের উপর দিয়ে পাঁচটি নতুন উড়ালপুল করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বৈঠকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন