নিজের বিয়ে রুখল নবম শ্রেণির ছাত্রী

নিজেই নিজের বিয়ে রুখল এক নাবালিকা। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার হোমলাতলার দক্ষিণ সর্দারপাড়ায় ওই নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে বিয়ে রুখলেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিজেই নিজের বিয়ে রুখল এক নাবালিকা। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার হোমলাতলার দক্ষিণ সর্দারপাড়ায় ওই নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে বিয়ে রুখলেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

ক্যানিং মহকুমার প্রশাসনের কর্তাদের কথায়, ওই এলাকার বাসিন্দা নুর ইসলাম তাঁর মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার মিনাঁখা এলাকার এক ব্যবসায়ীর পরিবারের ছেলের সঙ্গে। প্রথম থেকেই বিয়েতে সম্মতি ছিল না নবম শ্রেণির ছাত্রী নুর ইসলামের মেয়ের। মেয়েকে তিনি বোঝান, এখন তার বিয়ে দেওয়া হবে না। পাকা দেখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বছরতিনেক পরে বিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি মেয়েকে অন্ধকারে রেখেই তার বিয়ের ব্যবস্থা করতে থাকেন।

এ দিকে, ‘পাকা-দেখা’-র আড়ালে যে বিয়ের প্রস্তুতিই চলছে, তা টের পেয়ে যায় মেয়ে। শনিবার থেকে প্রায় সব আত্মীয়স্বজন বাড়িতে আসতে থাকেন। কয়েকজন আত্মীয়ের কাছেও মেয়ে জানতে পারে, রবিবার তাঁর বিয়ের ব্যবস্থাই করা হয়েছে। তার পরেই দুপুরে এক ফাঁকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই নাবালিকা স্কুলের কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সরাসরি চাইল্ড লাইনে ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পাওয়ার পরই চাইল্ড লাইনের তরফে জীবনতলা থানা ও ক্যানিং ২ বিডিও অফিসে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন চাইল্ড লাইনের কর্তারা।

Advertisement

ক্যানিং ২ বিডিও দেবব্রত পাল ও জীবনতলার থানার ওসি সুভাষ ঘোষ সন্ধ্যার পরে নুর ইসলামের বাড়ি হাজির হন। নুর ওই সময়ে বাড়ি ছিলেন না। বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজন বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বলে বিডিও ও ওসিকে জানান। তার পরেই নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার বয়ানও লিপিবদ্ধ করা হয়। ততক্ষণে চলে এসেছেন নাবালিকার বাবা নুর ইসলাম। নুর ইসলামকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ‘পাকা-দেখা’-র আড়ালে যে তিনি মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থাই করেছিলেন তা কবুল করেন তিনি।সব কথা শুনে বিয়ে বন্ধ করার নিদান দেন বিডিও। বিডিও-র কথায়, ‘‘নুর ইসলাম মুচলেকা দিয়েছেন। বিয়ে বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ ওসি সুভাষ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে স্কুলছাত্রীদের নিয়ে নাবালিকা বিয়ে রুখতে আলোচনাসভার আয়োজন হয়েছিল। সবার কাছেই চাইল্ড লাইনের নম্বর দেওয়া হয়েছিল। এই নাবালিকা সাহস করে নিজের বিয়ে রুখল। একে দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে বলে মনে করছি। নাবালিকা নিজেই যদি সচেতন হয় তাহলে সব ক্ষেত্রেই নাবালিকা বিয়ে রুখতে পুলিশ ও প্রশাসনে সুবিধা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন