হাফেজ সাহেবের ফোনে বন্ধ হল নাবালিকা বিয়ে

স্থানীয় এক হাফেজ সাহেব ফোন করেছিলেন থানার আইসিকে। জানান, মঙ্গলবার এক নাবালিকার বিয়ে হতে যাচ্ছে। পুলিশ যেন তা বন্ধ করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১৫
Share:

স্থানীয় এক হাফেজ সাহেব ফোন করেছিলেন থানার আইসিকে। জানান, মঙ্গলবার এক নাবালিকার বিয়ে হতে যাচ্ছে। পুলিশ যেন তা বন্ধ করে।

Advertisement

খবর পেয়ে হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ পাঠান রুদ্রপুরে। পুলিশ গিয়ে পনেরো বছরের এক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে। মঙ্গলবার তার বিয়ের কথা ছিল। পুলিশ মেয়েটিকে থানায় আনে। তাকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকার বাড়ি মছলন্দপুরে। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। পুলিশ গিয়ে মেয়ের আত্মীয়-স্বজনকে বিয়ে বন্ধ করতে বলেন। পরিবারের লোকজন প্রথমে পুলিশের কাছে অনুরোধ করেন, তাঁরা খুবই গরিব। বিয়ের জোগাড়ে প্রচুর টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন বিয়ে বন্ধ হলে সমস্যায় পড়তে হবে। পুলিশ বোঝায়, মেয়ের আঠারো বছরের নীচে বিয়ে হলে নানা শারীরিক-মানসিক সমস্যা হতে পারে। এমনকী, সন্তান প্রসবের সময়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তা ছাড়া নাবালিকা বিয়ে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পরে মেয়েটির বাবা পুলিশের কাছে লিখিত মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা এখন আর মেয়ের বিয়ে দেবেন না। মেয়েটি জানিয়েছে সে লেখাপড়া করতে চায়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, দুই পরিবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। হাবরায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাবালিকা মেয়েদের বিয়ের হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। শুধু পৃথিবাতেই বছরখানেকের মধ্যে ১৫টি নাবালিকা মেয়ের বিয়ে বন্ধ করেছে পুলিশ। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে অনেকের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, তা-ও মনে করেন কর্তারা। সব ক্ষেত্রে খবর এসে পৌঁছয় না।

মোমিনুল হক নামে যে হাফেজ ফোন করেছিলেন থানায়, তিনি থাকেন কুমড়া পঞ্চায়েতের রুদ্রপুরে। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। নমাজ পড়ান। জানান, এর আগেও এ ধরনের খবর পেয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েছেন। ওই তরুণের কথায়, ‘‘নাবালিকার বিয়ে দেওয়া বেআইনি, জুম্মাবারে যাঁরা নমাজ পড়তে আসেন তাঁদের বোঝাই এ কথা। যদি তারপরেও বহু ঘটনা ঘটে যায়।’’ সচেতনতার অভাবই এর কারণ, মনে করেন মোমিনুল।

তাঁর ভূমিকার তারিফ করে আইসি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এ ভাবে এগিয়ে এলে আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন