Date Cultivation

খেজুর চাষে দিন বদলের দিশা দেখছেন হামিদ

হামিদের আশা, ‘‘দু’য়েক বছরের মধ্যে সব গাছে খেজুর হবে। ভাল দামও মিলবে।’’ তিনি জানান, তাঁর কাছে মোরিয়াম, সুক্কার ও আজোয়া, তিন প্রজাতির খেজুরের চারা আছে।”

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ 

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ০৮:০৮
Share:

খেজুর গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত আব্দুল হামিদ। —নিজস্ব চিত্র।

আরবের খেজুর ফলছে হাসনাবাদের বেনা গ্রামে। ফলাচ্ছেন ওই গ্রামের আব্দুল হামিদ। এক সময়ে সেলাইয়ের কাজ করতেন তিনি। এখন মন দিয়ে খেজুর গাছের চারা তৈরি করছেন। তা থেকে ফলছে খেজুর। তাঁর আশা, এই খেজুরই তাঁর সুদিন ফেরাবে। ইতিমধ্যেই একটি গাছে খেজুর ধরেছে। তা দেখতে অনেকে ভিড় করছেন হামিদের বাড়িতে।

Advertisement

শ্রমিকের কাজ করে কষ্টে সংসার চালান হামিদ। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই ছেলে। জমি জায়গা বিশেষ নেই। থাকার মধ্যে আছে দু’কাঠা চাষের জমি। আমপানের সময়ে পরিচিত এক ব্যক্তি আরব থেকে খেজুরের বীজ এনে দিয়েছিলের তাঁকে। তিন ধরনের খেজুরের বীজ পেয়েছিলেন তিনি। সেগুলি থেকে চারা তৈরি করেছেন হামিদ। এখন খেজুর চাষে মন দিয়েছেন তিনি। একে একে তিরিশটি খেজুর গাছ তৈরি করেছেন হামিদ। তাঁর দাবি, এ বছর একটিতে ফলেছে প্রায় ১৫ কেজি খেজুর। যাঁরা দেখতে আসছেন, তাঁদের হাতে দুয়েক টুকরো খেজুর দিচ্ছেন তিনি।

হামিদের আশা, ‘‘দু’য়েক বছরের মধ্যে সব গাছে খেজুর হবে। ভাল দামও মিলবে।’’ তিনি জানান, তাঁর কাছে মোরিয়াম, সুক্কার ও আজোয়া, তিন প্রজাতির খেজুরের চারা আছে। এই সব জাতের খেজুরের বাজারদর বেশ ভাল। তাঁর দাবি, মোরিয়াম খেজুরের দাম কেজি প্রতি ৫০০ টাকা। সুক্কার প্রজাতির খেজুর বিক্রি হয় ৫০০-৮০০ টাকা প্রতি কেজি দরে। আজোয়া প্রজাতির খেজুরের দাম কেজি প্রতি ৮০০-২৫০০ টাকা। খেজুর গাছের চারা বিক্রির ব্যবসাও শুরু করেছেন হামিদ। বাড়ির ছাদে বহু চারা তৈরি করেছেন তিনি। সেগুলির দাম এক হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।

Advertisement

বিডিও (হাসনাবাদ) অলিম্পিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্প্রতি শুনেছি। ওঁর এই বিকল্প চাষের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা দ্রুত ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব। ওঁকে প্রয়োজনীয় সাহায্য ও পরামর্শ দেব, যাতে উনি আরও সাফল্য পান।’’

হামিদ জানান, বিশেষ পদ্ধতিতে মাটি তৈরি করে বীজ রোপণ করতে হচ্ছে। কী ভাবে? তিনি বলেন, ‘‘৩০ শতাংশ জৈব সার, ৩০ শতাংশ দোঁয়াশ মাটি, ২০ শতাংশ লাল বালি ও ২০ শতাংশ সাদা বালি দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করা হয়। সেই মাটিতে বসানো হয় চারা।’’

হামিদ গাছের পরিচর্যা শিখেছেন ইউটিউব দেখে। তিনি বলেন,
“এ বার আরও বেশি পরিমাণ জমিতে খেজুর গাছ বসানোর কথা ভাবছি। চারা গাছ এবং খেজুর বিক্রি করে সুদিন ফিরবে বলে আশা করি।
আরবের খেজুর এখানে ফলবে, তা কখনও ভাবিনি। এটাই আমার সাফল্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন