ধৃত: সমীরকুমার রায়। নিজস্ব চিত্র
এক কিশোরীকে অপহরণ, ধর্ষণ এবং নিষিদ্ধপল্লিতে তাকে বিক্রির অভিযোগে বসিরহাটের এক নার্সিংহোমের মালিকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল বসিরহাট এসিজেএমের আদালত। শনিবার অভিযুক্ত সমীরকুমার রায়কে গ্রেফতার করে বসিরহাট থানার পুলিশ। তাকে এ দিন দুপুরে আদালতে তোলা হলে বিচারক দশ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এই মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী অরিন্দম গোলদার বলেন, ‘‘ওই নার্সিংহোমে কাজ করার সময়ে ২০১৬ সালের নভেম্বরে নিখোঁজ হয় বসিরহাটের এক কিশোরী। তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে সিআইডি এক বছর পরে পুণের এক নিষিদ্ধপল্লি থেকে তাকে উদ্ধার করে। সে সময়ে নার্সিংহোমের কর্মী ঝুমা বিশ্বাস-সহ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। সিআইডি-র দেওয়া সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে আমার মক্কেল সমীরকুমার রায়কে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।’’
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোদপুরের নাটাগড় বাজার এলাকার বাসিন্দা সমীর দশ বছর ধরে বসিরহাটে ওই নার্সিংহোমটি চালাচ্ছে। ওই নার্সিংহোমেই কাজ করত কিশোরীটি। ২০১৬ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি সে নিখোঁজ হয়। মেয়েকে না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন তার বাবা। এরই মধ্যে মেয়েটি বাড়িতে ফোন করে জানায়, নার্সিংহোম থেকে ভাল কাজের লোভ দেখিয়ে বারাসত নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে তাকে কাশ্মীরের নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির বাবা এই তথ্য পুলিশের কাছে পেশ করেন।
তখনই মামলাটি হাতে নিয়ে সিআইডি-র গোয়েন্দারা ঝুমাকে গ্রেফতার করে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পেরেছিলেন, কিশোরীটি রয়েছে পুণের এক নিষিদ্ধপল্লিতে। নিখোঁজ হওয়ার এক বছর পরে গোয়েন্দারা সেখান থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করেন।
পুলিশের দাবি, ওই সময়ে সমীর পালিয়েছিল। এ বছরের ৩১ জানুয়ারি সিআইডি এই মামলায় চার্জশিট দেয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফার ‘সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট’ জমা পড়ে। ৫ মার্চ সমীরের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তারই ভিত্তিতে বসিরহাট থানার পুলিশ এ দিন সকালে সমীরকে গ্রেফতার করে।
তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সমীর বলে, ‘‘মেয়েটি নিখোঁজের পরই আমার ও ঝুমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় তখন আমাকে গ্রেফতার করা হয়নি। এখন ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’