চিকিৎসাধীন: হাসপাতালে আহত সমীর পোদ্দার। নিজস্ব চিত্র।
পার্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে বোমা ফেটে জখম হলেন দুই ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুরের চিড়িয়ামোড় এলাকায়। সেখানে একটি পার্কে মহাত্মা গাঁধীর মূর্তি রয়েছে। তাঁর জন্মদিন, ২ অক্টোবরের আগে ওই পার্ক ও মূর্তির আশপাশ পরিষ্কার করার কাজ করছিলেন কয়েক জন শ্রমিক। তখনই ফাটে বোমাটি।
পুলিশ জানিয়েছে, জখম দু’জনের নাম সমীর পোদ্দার ও জগন্নাথ সাউ। তাঁরা দু’জনেই টিটাগড়ের বাসিন্দা। এর মধ্যে সমীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ দিন যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, তার ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি-র (জোন ১) অফিস। পুলিশকর্তার অফিসের সামনে সাতসকালের এই ঘটনা চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি কে কান্নন-এর অফিসের উল্টো দিকে রয়েছে আর্দালিবাজার যাওয়ার রাস্তা। ওই এলাকাটি ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের এলাকার মধ্যে পড়ে। সেই রাস্তার মুখেই রয়েছে গাঁধীর মূর্তি-সহ ওই ছোট পার্কটি। তাঁর জন্মদিন এবং তিরোধান দিবসে জায়গাটি সাফসুতরো করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কের এক কোণে কিছু আবর্জনা জমে ছিল। এ দিন সকালে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ঠিকা শ্রমিকেরা কোদাল, বেলচা চালিয়ে সেই আবর্জনা সরাতেই একটা পাইপের মতো কিছু বেরিয়ে পড়ে। জখম সমীরবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম পুরনো লোহার পাইপ। কিছুতেই ওটা বার করা যাচ্ছিল না। আমার কাছে একটা হাঁসুয়া ছিল। ওই পাইপের উপরে সেটা দিয়ে মারতেই বিস্ফোরণ ঘটে। তার পরে সব অন্ধকার হয়ে গেল।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীরবাবুর চোখে এবং পায়ে চোট লেগেছে। ঘটনার সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন জগন্নাথ সাউ নামে এক ব্যক্তি। জখম হন তিনিও। সঙ্গে সঙ্গে দু’জনকে ব্যারাকপুরের বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে জগন্নাথবাবুকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সমীরবাবুকে আর জি করে পাঠানো হয়। তাঁর চোখের আঘাত গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
গত রবিবারই পলতার একটি স্কুলের মাঠে মিলেছিল দু’টি তাজা বোমা। তারও আগে গারুলিয়ার একটি স্কুলের সামনে মিলেছিল দু’টি বোমা। গারুলিয়ায় তিন বার তাজা বোমা মিলেছিল এক মাসের মধ্যে। শিল্পাঞ্চল জুড়ে বোমার এমন রমরমায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। তাঁদের প্রশ্ন, এত বোমা রাস্তা-ঘাট, পার্কে পড়ে থাকছে কেন? পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
কে কান্নন এ দিন বলেন, ‘‘ওটি ছিল কৌটোবোমা। সম্ভবত কেউ সেটি নর্দমার মধ্যে ফেলে গিয়েছিল। নর্দমা পরিষ্কার করার সময়ে আবর্জনার সঙ্গে হয়তো সেটি পার্কের কোণে তুলে রাখা হয়েছিল। কৌটো বোমা বলেই নর্দমার জলে সেটি নিষ্ক্রিয় হয়নি।’’