রক্ষণাবেক্ষণ নেই, পদে পদে তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কা

কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক (সাউথ) অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘বাসন্তী হাইওয়ের দুর্ঘটনা এড়াতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তার কোথায় কোথায় হাম্প, স্পিডব্রেকার, ডিভাইডার, স্পিডোমিটার, সতর্কীকরণ বোর্ড ইত্যাদি লাগানো যায়, তা দেখা হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২০
Share:

চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারায় এই মালবাহী গাড়িটি। মঙ্গলবার, বাসন্তী হাইওয়েতে। নিজস্ব চিত্র।

বাসন্তী হাইওয়ের উপরে একের পর এক দুর্ঘটনার জেরে এক সময়ে নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। রাস্তায় হাম্প, স্পিডোমিটার, বাতিস্তম্ভ, ডিভাইডার তৈরি থেকে শুরু করে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন রকমের ব্যবস্থা— করা হয়েছিল অনেক কিছুই। সায়েন্স সিটি থেকে ভোজেরহাট পর্যন্ত রাস্তায় একাধিক বিপজ্জনক বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাতে কোনও গাড়ি নয়নজুলিতে পড়ে না যায়, সে জন্য সেখানে কংক্রিটের বোল্ডারও লাগানো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারির অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সে সব। ফলে বাসন্তী হাইওয়েতে ফের এড়ানো যাচ্ছে না দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার, ভাইফোঁটার দিনে সেখানেই ফের একটি পণ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন চার জন মোটরবাইক আরোহী।

Advertisement

সায়েন্স সিটি থেকে বাসন্তী পর্যন্ত বাসন্তী হাইওয়ের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। তবে ভাঙড়ের ঘটকপুকুর থেকে সায়েন্স সিটি পর্যন্ত এই ২৮ কিলোমিটার রাস্তাই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের মতে, রাতের আলোআঁধারি রাস্তায় তো বটেই, দিনের বেলাতেও প্রতি মুহূর্তে বিপদের হাতছানি সেখানে। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মাসকয়েক আগে বানতলা চর্মনগরীতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যাত্রাপথ মসৃণ করতে সে সময়ে সায়েন্স সিটি থেকে কড়াইডাঙ্গা পর্যন্ত বাসন্তী হাইওয়ে থেকে হাম্পগুলি কেটে ফেলা হয়। শুধু তা-ই নয়, সায়েন্স সিটি থেকে ভোজেরহাট পর্যন্ত স্পিডোমিটার থাকলেও তার অধিকাংশই এখন খারাপ। রাস্তার পাশের বাতিস্তম্ভের অধিকাংশই জ্বলে না। ঘটকপুকুর মোড়ে একটি হাইমাস্ট লাইট আছে বটে, তবে সোনাখালি পর্যন্ত বাসন্তী হাইওয়ের অধিকাংশ জায়গাতেই আলোর ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যার পরে রাস্তায় আলো বলতে ভরসা ট্রাক-লরির হেডলাইট। এমনকি, রাতে পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে অনেক সময়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো হয় বলেও অভিযোগ করছেন স্থানীয়েরা।

কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ছয় মাসে বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক বছর আগে বানতলা চর্মনগরীর কাছে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল প্রাক্তন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ফারজানা আলমের স্বামী মোমিন চৌধুরীর। তার পরেই বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ করে। সে সময়ে ওই হাইওয়ের ১১টি জায়গাকে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বেপরোয়া গাড়ি চিহ্নিত করতে রাস্তার পাশে ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক (সাউথ) অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘বাসন্তী হাইওয়ের দুর্ঘটনা এড়াতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তার কোথায় কোথায় হাম্প, স্পিডব্রেকার, ডিভাইডার, স্পিডোমিটার, সতর্কীকরণ বোর্ড ইত্যাদি লাগানো যায়, তা দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন