বেআইনি গাড়ির দাপটে বাড়ছে দুর্ঘটনা

ছোট গাড়িগুলির মাথায় ভর্তি লোক। টাল খেতে খেতে চলেছে গাড়িগুলি। তার মধ্যেই চলছে রেষারেষি। ওভারটেকের ধুম দেখে চক্ষু চড়কগাছ!

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

সাগর শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৩
Share:

ছোট গাড়িগুলির মাথায় ভর্তি লোক। টাল খেতে খেতে চলেছে গাড়িগুলি। তার মধ্যেই চলছে রেষারেষি। ওভারটেকের ধুম দেখে চক্ষু চড়কগাছ!

Advertisement

কিছু দিন আগেও এই সব কারণে বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে সাগরে অভিযান চালাতে শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু হঠাৎ করেই তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

কিছু দিন আগে পথ দুর্ঘটনায় এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়। তারপর দিনই চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রও ওই একই রাস্তায় পথ দুর্ঘটনায় জখম হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনও ছিল বেশ কিছু দিন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, প্রায়শই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িগুলি বেপরোয়া ভাবে যাতায়াত করে। প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

ওই রাস্তায় বড়বাস, মিনিবাস চলে প্রায় ২১টি। কিন্তু তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি চলে ছোট গাড়ি। অভিযোগ, ছোট গাড়ির বেপরোয়া চালানোর জেরেই বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে সাগরে। বেশিরভাগ গাড়ির কোনও অনুমতি নেই। কচুবেড়িয়া-গঙ্গাসাগর রোডে বেপরোয়া গাড়ির দাপটেই গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারিয়েছে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বৈশাখী সাঁতরা।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, উল্কাবেগে চলা ছোট গাড়ি একের পর এক ওভারটেকের খেলায় মেতেছে। কচুবেড়িয়া-গঙ্গাসাগর বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক হরেন মান্না বলেন, ‘‘ছোট গাড়িগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের তোলা হয় না।

পড়ুয়ারা ২ টাকা ভাড়া দিয়েই বাসে যাতায়াত করে। স্কুলের সময়ে তাই কিছুটা লোক বাসের মাথায় চাপাতেই হয়। তবে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ছোট গাড়িগুলি চলে।’’

বৈশাখীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমিত্র দাস বলেন, ‘‘বামনখালিতে কয়েকটি স্কুল রয়েছে। স্কুলের সময় প্রায় ৪ হাজার ছাত্রছাত্রী এক সঙ্গে হয়। বার বার আমরা বলেছি, ওই সময়টা অন্তত যান নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা নেওয়া হোক। সেফ ড্রাইভের প্রচার হচ্ছে কেবলমাত্র বাইক আরোহীদের নিয়ে। কেন বেপরোয়া গাড়িগুলি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না?’’

একবার আপ-ডাউন করতে পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে ১৫ টাকা করে দিতে হয়। তার জেরেই চলছে জিও, ম্যাজিক থেকে শুরু করে ছোট গাড়ি। এ রকম প্রায় ৫০০ গাড়ির থেকে টাকা তোলা হয়। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও নিয়ম বলবৎ করা যাচ্ছে না।

কেন?

এ ব্যাপারে সরাসরি পুলিশকেই দায়ী করেছেন সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা। তাঁর কথায়, ‘‘বার বার পুলিশকে বলা হয়েছে গাড়িগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না বলেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। আমরা ফের থানা সমন্বয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি তুলব।’’

এক সূত্রের খবর, এর আগে প্রশাসনের তরফে বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতাদের চাপে তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, মাঝে মধ্যেই যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

কিন্তু তারপরে আবার একই ভাবে ট্রাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেড়ে চলে বেপরোয়া গাড়ির দাপট। ঝুঁকির যাত্রা।

কিন্তু বার বার এ ভাবে প্রাণ গেলে তার দায় কে নেবে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সাগর ব্লক জুড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন