এক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে এসে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য যুগ্ম বিডিও ওই নাবালিকার পড়াশোনার ব্যবস্থা, কন্যাশ্রী ও কেন্দ্রীয় কন্যা সুরক্ষা প্রকল্পে তাকে সাহায্যের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা রণে ভঙ্গ দেন। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার সোহাই-শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের বড় বিশ্বেশ্বর গ্রামে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মেয়েটির বাবা দিনমজুর। অর্থাভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণিতেই কিশোরীকে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়। এরপরেই স্থানীয় চ্যাংদানা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় সোনার দোকানের কর্মচারী এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করেন বাড়ির লোকজন। সোমবার দুপুরে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো প্রস্তুতিও নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। সেই খবর পেয়েই দেগঙ্গার যুগ্ম বিডিও কৌশিক পরামাণিক পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে আসেন। বিয়ে বন্ধ করতে বলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে উপস্থিত লোকজন খেপে ওঠে। যুগ্ম বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তিনি গ্রামবাসীদের বোঝান, নাবালিকার বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ। কিন্তু গ্রামবাসীরা প্রথমে সে কথা শুনতে চাননি। তাঁরা যুক্তি দেন, ধারদেনা করে বিয়ের আয়োজন করেছেন মেয়ের বাবা। বিরিয়ানি রান্না হয়েছে। সেই খরচ কী ভাবে পাওয়া যাবে। কৌশিকবাবু জানান, মেয়েটি যাতে কন্যাশ্রী এবং কন্যা সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পায়, প্রশাসন তার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু কোনও মতেই এই বয়সে তার বিয়ে দেওয়া যাবে না। এর পরেই গ্রামবাসীরা বিষয়টি মেনে নেন। মেয়ে সাবালিকা হওয়ার আগে বিয়ে দেওয়া হবে না বলে তার বাবা মুচলেখা দেন। ইতিমধ্যে বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন বর। তিনি ও তাঁর পরিবারের তরফেও একই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ফের পড়াশোনা করতে পারবে শুনে মেয়েটিও খুশি হয়। বিডিও বলেন, “মেয়েটি যাতে ফের পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য প্রশাসন সব রকম ভাবে সাহায্য করবে।”