আমডাঙার বিলে ডুবে থাকে বোমা, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা

গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, আমডাঙার বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রয়েছে। এর আগে ওই বিল থেকে কয়েক হাজার বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৮
Share:

উদ্ধার: ড্রাম ও ব্যাগে ভরা এই বোমাগুলিই পাওয়া যায় বিলের জল থেকে। সোমবার, আমডাঙায়। নিজস্ব চিত্র

বারবার তিন বার। আমডাঙা থেকে বোমা উদ্ধার হয়েই চলেছে।

Advertisement

সোমবার আমডাঙার বর্তি বিল থেকে কয়েকটি ড্রাম এবং ব্যাগ থেকে উদ্ধার হল ৭৪ টি তাজা বোমা। এর আগে দু’ সপ্তাহে দু’ দফায় উদ্ধার হয়েছে শতাধিক তাজা বোমা। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, আমডাঙার বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রয়েছে। এর আগে ওই বিল থেকে কয়েক হাজার বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ।

আমডাঙা থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বর্তি বিলে খোঁজ চালায়। সেখান থেকে কয়েকটি ড্রাম এবং একটি ব্যাগ উদ্ধার করে। সেগুলি বিলের জলে ডোবানো ছিল। ওই ড্রামগুলি থেকে মেলে ৭৪টি তাজা বোমা। সেগুলিকে নিস্ক্রিয় করা হয়। পুলিশ জানায়, বোমার খোঁজে আরও তল্লাশি চলছে।

Advertisement

কয়েক দিন আগে আমডাঙার তারাবেরিয়ার শঙ্করপুর সেতুর পাশে ফাঁকা মাঠে মিলেছিল ৬০টি তাজা বোমা। তার কয়েক দিন পরে ফের খোলা মাঠ থেকেই মেলে আরও কয়েকটি বোমা। পুলিশের ধারণা, কেউ সেগুলি প্রকাশ্য এলাকায় ইচ্ছে করেই ফেলে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী টহলদারি শুরু করার পরেই দুষ্কৃতীরা জমানো বোমা খালাস করতেই এমনটা করছে। বর্তি বিলের বোমা লুকিয়ে রাখার খবরও গোপন সূত্রে পায় তারা।

এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, গ্রামে গ্রামে প্রচুর বোমা মজুত করে রাখা হয়েছে। ভোটের সময়ে বা তার আগে সেগুলি ব্যবহার হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় নিয়মিত টহল দিলে গোলমাল ঠেকানো যাবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রথম টহল দেওয়ার পরের দিনই প্রথমবার বোমা মিলেছিল ফাঁকা মাঠে।

গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই আমডাঙা উত্তপ্ত। তিনটি পঞ্চায়েতে শাসক তৃণমূল একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের সময়েই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তারাবেরিয়া, শঙ্করপুর, টেঙাটেঙি এলাকা। তিন দিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বোমা-গুলির লড়াই চলে। পুলিশ কার্যত এলাকায় ঢুকতে পারেনি। সেই সংঘর্ষে তৃণমূলের দু’জন এবং সিপিএমের এক কর্মী খুন হন।

জেলার বিভিন্ন থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে এলাকায় ঢুকলেও সংঘর্ষ থামাতে বেগ পেতে হয় তাঁদের। দু’পক্ষের লড়াইয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন অনেকে। তাঁদের বেশিরভাগই সিপিএম সমর্থক। পুলিশ এলাকার দখল নেওয়ার পরে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার হয়। বর্তি বিল থেকে উদ্ধার হয় কয়েক হাজার তাজা বোমা। পুলিশ জানিয়েছে, এই বোমাগুলি বিশেষ ভাবে তৈরি। ফলে, জলের সংস্পর্শে এলেও তা নষ্ট হয় না।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এক মাসে প্রতি রাতে এলাকায় বাইরের লোকের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। আশঙ্কা, তাদের মাধ্যমেই এলাকায় ঢুকছে বোমা এবং অস্ত্র। তবে এলাকাতেও বোমা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মিত তল্লাশি এবং নজরদারি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন