অবরোধ: দেহ নিয়ে পথে জনতা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
জ্বরে ভুগে মৃত্যুতে ক্রমশ পরিস্থিতি ঘোরাল হচ্ছে দেগঙ্গায়।
এ বার দেহ নিয়ে পথ অবরোধের ঘটনাও ঘটল। বিক্ষোভকারীদের দাবি, একে তো এলাকায় স্বাস্থ্যশিবির হচ্ছে না। মশার উপদ্রব বেড়ে চলেছে। ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ছে অনেকের রক্তে। কিন্তু জ্বরে ভুগে মৃত্যু হলেই স্বাস্থ্য দফতর বলছে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। অনেক সময়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর শংসাপত্রে কারণ হিসাবে সেপটিসেমিয়াও লেখা হচ্ছে। জ্বরে ভুগে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটনা ঘটলেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর।
শনিবার সকালে দেগঙ্গার হাদিপুর কালীতলা বাজার-সংলগ্ন এলাকায় বিটন নাথের (২৭) দেহ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাস্তার উপরে কাঠের বেঞ্চ ও বাঁশ লাগিয়ে, পোস্টার হাতে বেড়াচাঁপা-হাড়োয়া রোড অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অবরোধে আটকে পড়ে যান চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশ ও বিডিওকে। অবিলম্বে এলাকায় স্বাস্থ্যশিবির বসানোর হবে, রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এই আশ্বাস দেন বিডিও দেবব্রত সাউ। এরপরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিএমওএইচ সূরজ সিংহ পরে বলেন, ‘‘চিকিৎসকের অভাব আছে। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের যাদবপুর গ্রামে গত কয়েক দিন জ্বরে ভুগছিলেন বিটন। তাঁকে ভর্তি করা হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পাঠানো হয়েছিল আরজিকরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি। ওই গ্রামেরই কলেজ ছাত্র সৌমেন পালও (২৪) জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছেন বারাসতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে।
স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ দে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে চুন, ব্লিচিং ছড়ানো হয়নি। অথচ মাইক প্রচার করা হচ্ছে, বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সে সব করবেটা কে?’’ এক বিক্ষোভকারী সঞ্জিত কুণ্ডু বলেন, ‘‘ঘরে ঘরে জ্বর। অথচ, স্বাস্থ্য দফতরের নজর নেই।’’ ডেঙ্গির লক্ষণ নিয়ে ভুগে মৃত্যু হলেও তা মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।
বিডিও দেবব্রত সাউ বলেন, ‘‘চিকিৎসক নেই। যে কয়েকজন আছেন, পরিষেবা দেওয়ার তুলনায় তাঁদের সংখ্যা কম। মশা মারার জন্য গাড়ি ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কী ভাবে সমাধান করা যায়, সে জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’’ তবে শীঘ্রই স্বাস্থ্যশিবির খোলা, পঞ্চায়েতের মাধ্যমে চুন-ব্লিচিং ছড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।