রেল অবরোধে সামিল ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। শনিবার ছবি তুলেছেন নির্মল বসু
মহিলা শৌচালয়ের পাশেই পুরুষদের জন্য ব্যবস্থা। কিন্তু কারও মাথায় কোনও ছাদ নেই। মহিলা শৌচালয়ের দরজাটুকু নেই। আব্রু ঢাকার নূন্যতম প্রকরণটুকু না থাকায় মহিলারা ভ্যাবলা স্টেশনের শৌচালয় বহু দিন ধরেই ব্যবহার করতে পারেন না। সম্প্রতি আনন্দবাজারে সেই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
বেহাল শৌচালয়ের বিরুদ্ধে শুক্রবার প্রতিবাদে নামলেন
যাত্রীদের একাংশ। ট্রেন আটকে মিনিট কুড়ি বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। স্টেশনে যাত্রী-ছাউনি না থাকার ফলেও ক্ষোভ ছিল। এ দিন সেই দাবিও সামনে এসেছে।
এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ এক দল রেলযাত্রী বারাসত-হাসনাবাদ শাখার ভ্যাবলা স্টেশনে লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন প্ল্যাটফর্মে শিয়ালদহগামী ট্রেন দাঁড়িয়ে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ভ্যাবলা স্টেশন হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। অথচ মহিলাদের জন্য নিরাপদ শৌচালয় নেই। পুরুষ শৌচালয়ও বেহাল। যাত্রী-ছাউনি না থাকায় বারো মাস খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। বহুবার রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি বলেও জানান বিক্ষোভকারীরা।
ভ্যাবলা স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছাদবিহীন পাঁচিলের এক ধারে ‘পুরুষ’ অন্য ধারে ‘মহিলা’ লেখা শৌচালয় আছে ঠিকই। কিন্তু তা ভাঙাচোরা, দুর্গন্ধে ভরা। ভিতরে মল, আবর্জনা পড়ে থাকে। দুই শৌচালয়ের মাঝে কেবল বুক-সমান একটা পাঁচিল। ছেলেদের থেকে মেয়েদের দিকের পাঁচিল একটু উচুঁ। এক পাশে দাঁড়ালে অন্য পাশে থাকা মানুষ স্পষ্ট দেখা যায়। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ওই বাথরুমই ভরসা পুরুষ যাত্রীদের। তবে দরজাবিহীন প্রায় খোলা জায়গায় ওই বাথরুম মহিলাদের পক্ষে ব্যবহার যোগ্য নয়।
পাশেই মনোহারি দোকানি কাদের মোল্লার। তিনি বলেন, ‘‘খোলা জায়গায় পুরুষ যাত্রীদের শৌচালয়ের পাশে মহিলারা জন্য এমন অদ্ভূত ব্যবস্থা দেখে কয়েক জন ব্যবসায়ীরা মিলে দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলাম। ক্ষুব্ধ রেল যাত্রীরা তা একদিন ভেঙে দেন।’’ কল্পনা মণ্ডল, চন্দ্রা দফাদারদের বক্তব্য, ‘‘কলকাতা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টার পথ। ট্রেন থামলে অনেকেরই শৌচালয়ে যাওয়ার দরকার পড়ে। অথচ মহিলাদের জন্য কোনও ভদ্রস্থ ব্যবস্থা নেই।’’ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অন্তরা মিত্র, পৃথা চক্রবর্তী, বাপ্পা সরকার, বাপি ভট্টাচার্যদের কথায়, ‘‘ছাদবিহীন পাশাপাশি
পুরুষ-মহিলাদের শৌচালয়ের কথা কেউ কখনও শুনেছেন বলে তো মনে হয় না। কার মাথা থেকে যে এমন নকসা বেরিয়েছে!’’