বিক্ষোভ: সামিল বৃদ্ধারাও। মন্দিরবাজারে। ছবি: দিলীপ নস্কর
মগরাহাট, কুলপির পর এ বার মদের দোকান বন্ধের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন মন্দিরবাজারের বাসিন্দারা।
ঝাঁটা, লাঠি হাতে নিয়ে সোমবার সকাল ১১টা থেকে মহিলারা সুলতানপুর মোড়ের কাছে অবরোধ শুরু করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। পুলিশ বোঝাতে গেলে তাঁরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। লাঠি নিয়ে তাড়াও করেন। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে অবরোধ তুলে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবরোধের জেরে ডায়মন্ড হারবার ও রামগঙ্গাগামী গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। তাতে যানজট তৈরি হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কুলপি থেকে রামগঙ্গা যাওয়ার রাস্তায় সুলতানপুর মোড়ের পাশেই মদের দোকানটি রয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে দোকানটি চলছে। মদের দোকানের ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রায় এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্কুল, এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি আরও কয়েকটি স্কুল। রাস্তার পাশে মোড়ে ওই মদের দোকানটি চালু হওয়ার পর থেকে মদ্যপ অবস্থায় ওই মোড় পার হতে গিয়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে বাসিন্দারা জানান।
শনিবার ওই দোকান থেকে মদ কিনে মোটরবাইক নিয়ে মোড়ে ওঠার মুখেই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান ওই এলাকারই বাসিন্দা দেবকুমার মণ্ডল (৪২) নামে এক যুবক। দিনের পর দিন মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি বা বাইক চালাতে গিয়ে ওই মোড়ে পর পর দুর্ঘটনা ঘটছে। যা মেনে নিতে পারছিলেন না বাসিন্দারা। শনিবারের দুর্ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। বাধ্য হয়ে অবরোধ করেন। ওই এলাকার সুলতানপুর ছাড়াও গাববেড়িয়া, দয়রামপুর, রায়পুর, রঘুনাথপুর, পার্বতীপুর, উল্লোন গ্রাম-সহ ৮ থেকে ১০ গ্রামের মহিলা-পুরুষ দল বেঁধে লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে আন্দোলনে নামে। ওই আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন বয়স্ক মহিলার।
রাখী হালদার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমার স্বামী রবিন দিন মজুরের কাজ করেন। সারা দিন খেটে যা আয় করে সেই টাকায় ওই দোকানে মদ খেয়ে নিত্য বাড়িতে ফিরে অত্যাচার চালায়। ছেলেমেয়েদের ঠিকমত খেতেও দেয় না। বাধ্য হয়ে ভিক্ষা করে ছেলে মেয়ের পেট চালাই।’’ শুধু রাখী নন। ওই এলাকার অনেকেরই এখন একই অবস্থা।বিমলা পুরকাইত জানান, তাঁর স্বামী রোজ ওই দোকান থেকে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়ে ও তাঁর উপর অত্যাচার চালায়। বাধা দিলে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপাতে আসে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মদের দোকানে ছোট ছেলেমেয়েদেরও দেখা যায়। এতে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। মহিলারা ভয়ে সন্ধ্যার পর বাড়ির থেকে বেরোতে চান না।
পুলিশ জানিয়েছে, আন্দোলকারীদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।