সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের মারধর, অপহরণ এবং হুমকির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের পক্ষ থেকে সোমবার নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার সন্দেশখালির সিপিএম প্রার্থী নিরাপদ সর্দারের নেতৃত্বে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য মৃণাল চক্রবর্তী, জেলা কমিটির সদস্য নিরঞ্জন রায়-সহ অন্য নেতারা এ বিষয়ে বসিরহাটের এসডিপিওকেও অভিযোগ করেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার দাবিও তোলেন।
সিপিএমের অভিযোগ, গত দু’দিন ধরে সন্দেশখালির জেলিয়াখালি, সরবেড়িয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। তাদের দাপটে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
রবিবার রাতে জেলিয়াখালি এবং সরবেড়িয়ায় তৃণমূলের মারে আহত হয়েছেন দলের বসন্ত মণ্ডল, সুভাষ মণ্ডল এবং নির্মল বেরা নামে তিন ব্যক্তি। তাঁরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত কয়েক দিন ধরেই এলাকায় পোস্টার মারতে দেওয়া হচ্ছে না বলে সিপিএমের পক্ষে অভিযোগ উঠছিল। এ দিন রাতে পোস্টার মারার সময় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। এরপরেই শুরু হয় মারামারি। নিরাপদবাবু বলেন, ‘‘বিরোধীরা প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছে। সেই দিয়েই মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে।” ডিওয়াইএফ নেতা জয়নাল মোল্লাকে তাঁর বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের কার্যালয়ে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে প্রচণ্ড মারধরও করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানায়, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন সিপিএমের সন্দেশখালি ২ জোনাল কমিটির সদস্য বিনন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘রবিবার রাতে তিরিশ জনের একটি দল মোটরবাইক নিয়ে আমাদের বাড়িতে চড়াও হয়। ওই সময়ে বাড়িতে না থাকায় রক্ষা পাই। তবে দুষ্কৃতীরা বাড়ির মহিলাদের গালিগালাজ করে হুমকি দেয়। সিপিএমের হয়ে ভোট প্রচার করলে খুব খারাপ হবে বলে যায়।’’ রাতের দিকেও তৃণমূলের বাইক বাহিনী এলাকায় ঘুরছে বলে অভিযোগ।
এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বসিরহাটের সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলি বলেন, “আসলে গত বছরগুলিতে ক্ষমতায় থেকেও নিরাপদবাবুরা এলাকায় কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি। তাই এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত। নির্বাচনের আগে পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে বুঝে মনগড়া গল্প বলছেন। আমরা কোনও ভাবে এ সবে জড়িত নই।’’ নিরাপদবাবু বলেন, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিষয়ে সন্দেশখালির পুলিশের ভূমিকা নিষ্ক্রিয়। অথচ শাসকদল যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করে একমাত্র তা হলেই পুলিশ পদক্ষেপ নেয়।” প্রসঙ্গত, এই একই অভিযোগে সন্দেশখালি থানায় পর পর দু’জন ওসির বদলি হয়।