দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি এসটিএফের হেফাজতে। — নিজস্ব চিত্র।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে আল কায়দার ভারতের শাখা সংগঠন আকিস (আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট)। উত্তর ২৪ পরগনার শাসন থেকে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ধৃত হুগলির আরামবাগের সামতা এলাকার বাসিন্দা ধৃত কাজি আহসানউল্লাহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুর গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা আব্দুল রাকিব সেই জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম কিংপিন। এমনটাই মনে করছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শাসন থেকে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করে এসটিএফ। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতদের মধ্যে রাকিব সংগঠনে পুরনো লোক। তিনি বছর দশেক ওই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছেন এসটিএফ আধিকারিকরা। তদন্তকারীদের দাবি, মূলত বাংলাদেশ এবং ভিন্রাজ্য থেকে বাংলার পা রাখা জঙ্গিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে রাকিব। পাশাপাশি সংগঠন তাকে ‘সমমনস্ক’দের মগজধোলাই করে এককাট্টা করার দায়িত্বও দিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। রাকিব সামনে একটি সংস্থাকে রেখে চাঁদা তুলত। তদন্তকারীরা মনে করছেন, রাকিবের চাঁদা তোলার প্রাথমিক উদ্দেশ্য অর্থ সংগ্রহ ছিল না। বরং চাঁদা তোলার নাম করে সে সমমনস্কদের খুঁজে বার করে মগজধোলাইয়ের চেষ্টা করত।
এসটিএফ মনে করছে, দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রশিক্ষণ শিবিরও চালাতেন রাকিব। তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় আরামবাগের বাসিন্দা আনসানউল্লাহর। তদন্তকারীদের ধারণা, আনসানউল্লাহ আকিসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিন-চার বছর। তিনি রাকিবকে সমস্ত কাজে সহযোগিতা করতেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
যে এলাকা থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে শাসনের সেই খড়িবাড়ি এলাকা থেকে খুব সহজেই কলকাতার দিকে রওনা দেওয়া যায়। রাস্তায় পুলিশি নজরদারিও তেমন নেই। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা যায় সহজে। এই সব খতিয়ে দেখেই ধৃতরা ওই এলাকাটি বেছে নিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যে আল কায়দার আর কোন মডিউল কাজ করছে কি না, জঙ্গি সংগঠনটি স্লিপার সেল হিসাবে কাদের ব্যবহার করছে, ধৃতরা কলকাতার উদ্দেশে কেন রওনা দিয়েছিল— এমন নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ওই দুই সন্দেহভাজন জঙ্গির শাসনের শিকড় কতটা ‘গভীর’ তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।