Ambulance Driver

Bangaon: অ্যাম্বুল্যান্সের চালককে মারধরের অভিযোগ, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে দাদাগিরির নালিশ

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে থাকা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একাংশের বিরুদ্ধে দাদাগিরি ও জুলুমবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২১ ০৯:১২
Share:

এই অ্যাম্বুল্যান্সটিই হাসপাতালে এসেছিল। ইনসেটে, প্রহৃত চালক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

কলকাতা থেকে আসা এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও টেকনিশিয়ানকে মারধরের অভিযোগ উঠল বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে থাকা কয়েকজন বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতের ঘটনা। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে থাকা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একাংশের বিরুদ্ধে দাদাগিরি ও জুলুমবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ দিনের ঘটনার পর এক রোগীর পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে চালকদের বিরুদ্ধে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরের জয়পুর-মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা পরিমল মালাকারকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শনিবার সন্ধ্যায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রবিবার চিকিৎসকেরা তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। পরিমলের পরিবারের লোকজন কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই নার্সিংহোম থেকেই আইসিইউ-সহ একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ কলকাতা থেকে অ্যাম্বুল্যান্সটি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছায়। অভিযোগ, কলকাতা থেকে অ্যাম্বুল্যান্সটি হাসপাতালে আসতেই হাসপাতাল চত্বরে থাকা কিছু বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক চড়াও হয়। অ্যাম্বুল্যান্সটির চালক ও টেকনিশিয়ানকে রোগী নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়। তাঁদের কাছে টাকা দাবি করা হয়।

পরিমলের ছেলে প্রতীক বলেন, “কলকাতা থেকে আসা অ্যাম্বুল্যান্সটির চালক ও টেকনিশিয়ানকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে থাকা কয়েকজন বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক মারধর করে। টেকনিশিয়ানের মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা রোগী নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। খবর পেয়ে আমরা গিয়ে রোগী নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।”

Advertisement

রোগীর আত্মীয়রা জানান, মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে থাকা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা বাইরে থেকে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে আসলেই রোগী নিয়ে যেতে বাধা দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই জোর করে বাইরের অ্যাম্বুল্যান্স ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরেই এই দাদাগিরি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে তারা খারাপ আচরণও করে। কলকাতায় রোগী নিয়ে যেতে হলে অতিরিক্ত ভাড়াও দাবি করা হয়। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চালকদের দাবি মতো টাকা দিতে বাধ্য হন পরিজনেরা।

অভিযোগ, দাবি মতো টাকা দিতে না পারলে তারা রোগী নিয়ে যায় না। আবার বাইরে থেকে অন্য অ্যাম্বুল্যান্সকেও রোগী নিয়ে যেতে দেওয়া হয় না। করোনা পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ আকার নিয়েছিল, তখনও চালকেদের কেউ কেউ কলকাতায় রোগী নিয়ে যেতে লাগামছাড়া টাকা নিয়েছে।

অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সংগঠন প্রোগ্রেসিভ অ্যাম্বুল্যান্স অ্যান্ড অপরেটর্স ইউনিয়নের সভাপতি প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “এ দিন যা ঘটেছে, তা আমরা বরদাস্ত করব না। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত এক অ্যাম্বুল্যান্স চালককে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইউনিয়ন থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার অ্যাম্বুল্যান্সটিও বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও আইনি পদক্ষেপ করবে।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, রোগী নিয়ে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নেই। সেই সুযোগটাই নিচ্ছে চালকদের একাংশ। হাসপাতাল সুপার শঙ্কর প্রসাদ মাহাতো বলেন, “রোগী নিয়ে যেতে কেউ বাইরে থেকে অ্যাম্বুল্যান্স আনতেই পারেন। তাতে কেউ বাধা দিতে পারে না। রবিবারের বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন