মহিলাকে অ্যাসিড, বৃদ্ধকে পাল্টা মারধর

ছেলের সঙ্গে এক তরুণীর সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি বৃদ্ধ। তাই ছেলে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন বেঙ্গালুরু। সেই রাগে ওই তরুণীর মাকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠল বৃদ্ধের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২১
Share:

অ্যাসিড হামলায় ধৃত। হাবড়ায়। নিজস্ব চিত্র

ছেলের সঙ্গে এক তরুণীর সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি বৃদ্ধ। তাই ছেলে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন বেঙ্গালুরু। সেই রাগে ওই তরুণীর মাকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠল বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। ওই বৃদ্ধকে আবার ধরে ফেলে বঁটি এবং কোদালের বাট দিয়ে পাল্টা মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই তরুণী এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার রাতে হাবড়ার রাজবল্লভপুর এলাকার এই ঘটনায় বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রির বিষয়টি ফের চর্চায় উঠে এসেছে। অ্যাসিডে জখম বছর চল্লিশের জাহিদা বিশ্বাস নামে ওই মহিলাকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বাঁ চোখ কিছুটা জখম হয়েছে। আঘাত তত গুরুতর নয়। ৭১ বছর বয়সী অ্যাসিড হানায় অভিযুক্ত আব্দুল সাত্তার বিশ্বাসকে ভর্তি করানো হয় হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছিল। সোমবার ছাড়া পাওয়ার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কোথা থেকে তিনি ওই অ্য়াসিড কিনেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজবল্লভপুরে দুই পরিবার কাছাকাছিই থাকে। বছর দুয়েক আগে আব্দুলের ছোট ছেলে সাবির আলির সঙ্গে জাহিদার মেয়ে লিনা পরভিনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বেশ কিছুদিন আগে আব্দুল সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে আপত্তি জানান। বিয়েতেও বেঁকে বসেন। কয়েক মাস আগে রাগ করে সাবির বেঙ্গালুরু চলে যান। তারপর থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্কও রাখছেন না।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছেলের সঙ্গে দূরত্ব হওয়ার জন্য আব্দুল ওই তরুণী এবং তাঁর মা জাহিদাকেই দায়ী করেন। সেই আক্রোশ থেকে রবিবার রাত ১০টা নাগাদ তিনি গোপনে জাহিদার বাড়ি যান। তিনি প্রথমে লিনার ঘরে অ্যাসিড ছওড়েন বলে অভিযোগ। তবে, তা লিনার গায়ে লাগেনি। লিনার চিৎকারে মা জাহিদা এলে তাঁকে লক্ষ করেও বৃদ্ধ অ্যাসিড ছোড়েন বলে অভিযোগ। অ্যাসিড জাহিদার মুখে গিয়ে পড়ে। মা-মেয়ে দমে না-গিয়ে বৃদ্ধকে ধরে বঁটি এবং কোদালের বাট দিয়ে পিটিয়ে দেন বলে অভিযোগ। কোনও রকমে বাড়ি ফেরেন বৃদ্ধ।

জাহিদা বলেন, ‘‘আমি তো মেয়ের সম্পর্কে আপত্তি জানাইনি। উনিই জানিয়েছেন। ওঁর ছেলে চলে গেলে আমি কী করব? সে জন্য এমন হামলা কল্পনা করিনি।’’ বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। আব্দুলের পরিবারের লোকজন ওই অভিযোগ তুললেও এ নিয়ে থানায় যাননি।

এ দিকে, খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রিতে যেখানে বিধি-নিষেধ রয়েছে, সেখানে হাবড়ায় নানা দোকান থেকে তা বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। উঠেছে পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্নও। এক মুদি-দোকানি স্বীকার করেন, ‘‘আমরা জানি এ ভাবে অ্যাসিড বিক্রি বেআইনি। তবে নানা কাজের জন্য অ্যাসিডের চাহিদা থাকায় আমরা লোক বুঝে বিক্রি করি।’’ এক পুলিশকর্তা এ ব্যাপারে অবশ্য সচেতনতার উপরে জোর দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও দোকানে যদি গোপনে অ্যাসিড বিক্রি হয়, পুলিশের পক্ষে সেই খোঁজ পাওয়া কঠিন। মানুষকেই সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন