অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ বসিরহাটে

মহিলাদের হুমকি, সঙ্গে গালিগালাজ

অসামাজিক কাজকর্মের প্রতিবাদ করে ক্লাব ভেঙে দিয়েছিলেন মহিলারা। তারই জেরে শুক্রবার রাতভর এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে মহিলাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বহিরাগত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:২৪
Share:

ভাঙচুর: এখানেই বসত মদ-জুয়ার আসর। ছবি: নির্মল বসু

অসামাজিক কাজকর্মের প্রতিবাদ করে ক্লাব ভেঙে দিয়েছিলেন মহিলারা। তারই জেরে শুক্রবার রাতভর এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে মহিলাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বহিরাগত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বসিরহাটের ছোট জিরাকপুরের মোক্তারবাগান এলাকার মহিলারা। শনিবার বসিরহাট থানায় এসে অভিযোগ জানান তাঁরা। স্মারকলিপিও দেন। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধ কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু বছর আগে মোক্তারবাগানে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি ক্লাব ঘর তৈরি করেছিলেন। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে সন্ধে ঘনালেই ক্লাবঘরে মদ-জুয়ার আসর বসছে। হই হট্টগোল চলছে। ক্লাবের পাশের কল থেকে জল আনতে গেলে মহিলাদের কটূক্তি শুনতে হচ্ছে। স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাইরে থেকে জড়ো হচ্ছে ছেলের দল। তাদের হুজ্জুতে এলাকায় ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে।

Advertisement

তিতিবিরক্ত মানুষজন রবিবার ক্লাবঘরটি ভেঙে দেন। প্রতিবাদের সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারাই। অভিযোগ, তারপর থেকেই শুরু হয় দুষ্কৃতীদের নানা রকম তাণ্ডব।

শনিবার বসিরহাট থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে মালতি সরকার, মানসী সরকার, ভারতী বিশ্বাসরা বলেন, ‘‘ক্লাবে নানা অসামাজিক কাজ চলছে। বহিরাগতদের নিয়ে জুয়া-মদের আসর বসছে। সন্ধ্যার পর মহিলারা বাইরে বেরোতে সাহস করছেন না। এই পরিস্থিতিতে আমরা মহিলারা ক্লাবটি ভেঙে দিতে বাধ্য হয়েছি।’’ তাঁর দাবি, মহিলারা যতটা না ভেঙেছিলেন, রাগ দেখাতে দুষ্কৃতীরা ক্লাবের আরও বেশি অংশ নিজেরাই ভেঙে দেয়।

ক্লাব ঘরটি বসিরহাটের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। স্থানীয় কাউন্সিলরের স্বামী গোপাল দাস বলেন, ‘‘সামাজিক কাজ ছেড়ে যে ভাবে বহিরাগতেরা ক্লাবে জুয়া-মদের আসর বসাতে শুরু করেছিল, তাতে না ভেঙে কোনও উপায় ছিল না। এলাকার মানুষ ক্লাব ভাঙার পরে রাতে বহিরাগত কিছু লোক পাড়ায় ঢুকে মা-বোনদের নামে গালিগালাজ করেছে। বাসিন্দাদের বাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল-পাটকেল ছুড়েছে।’’ এ দিন এলাকায় গিয়ে ক্লাবের কারও দেখা মেলেনি।

দুষ্কৃততীরা বোমা মারার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে লক্ষ্মী হালদার নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘ওদের ভয়ে আমরা সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি।’’ রিঙ্কু হালদার, শচীন বিশ্বাস, কানাই ঘোষ, প্রসেনঞ্জিৎ বিশ্বাসদের কথায়, ‘‘ক্লাবের মতো একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান মানুষের উপকারের জন্য, বিনোদনের জন্য। সেখানে যদি অসামাজিক কাজকর্ম শুরু হয়, তা মানা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন