যশোর রোড সম্প্রসারণে সহযোগিতার আশ্বাস

নানা জটিলতায় বার বার আটকেছে যশোর রোড সম্প্রসারণের পরিকল্পনা। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে যশোর রোডের সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। কী ভাবে এই পরিকল্পনা রূপায়ন করা হবে তা সরেজমিনে দেখল আনন্দবাজার।কথা চলছে বহু দিন। কিন্তু এত দিন কাজ এগোয়নি। তবে অবশেষে দেখা গিয়েছে আশার আলো। বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণের সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা রূপায়ণের নকশা তৈরি করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০৩:০১
Share:

কথা চলছে বহু দিন। কিন্তু এত দিন কাজ এগোয়নি। তবে অবশেষে দেখা গিয়েছে আশার আলো। বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণের সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা রূপায়ণের নকশা তৈরি করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোর রোড সম্প্রসারণের অঙ্গ হিসাবে বনগাঁ শহরে একটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ (আরওবি) তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত উড়ালপুলটি বনগাঁ যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাপীঠ স্কুলের সামনে থেকে শুরু হয়ে হীরালাল মূর্তির মোড়ে শেষ হওয়ার কথা। প্রস্তাবিত উড়ালপুলটি প্রায় ১১১৫ মিটার লম্বা এবং ১২ মিটার চওড়া হবে। উড়ালপুলের নিচে দিয়ে যশোর রোডে দু’টি সার্ভিস রোড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তৈরি হবে নিকাশি নালা এবং সাবওয়ে। বর্তমানে ৫ মিটার চওড়া যশোর রোডকে ১১ মিটার চওড়া করার কথা রয়েছে।

বনগাঁর মহকুমা শাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় জানান, যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য যাদের সরানো হবে তাদের যথাসম্ভব পুনর্বাসন দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। পুরসভা, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সমীক্ষার কাজ করবে। পুলিশ প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করবে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ি আগে যশোর রোড শেষ বার সম্প্রসারণ হয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকে এই রাস্তার দু’ধারে বসে পড়েছে হকার। তৈরি হয়েছে অসংখ্য পাকা ও কাঁচা নির্মাণ। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, বাম-ডান দুই আমলেই এই বেআইনি দখল হটাতে বহু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতি বার বাধা এসেছে বিস্তর। বর্তমানে যশোর রোডের অবস্থা এমনই যে, এই রাস্তা দিয়ে দু’টি বড় গাড়ি পাশাপাশি যেতে সমস্যা হয়। রয়েছে ভ্যান, টোটো ও অটোর দাপট। মাঝে মধ্যেই যানজটে আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স। রাস্তার এই অবস্থার জন্য বনগাঁ থেকে কেউ সড়ক পথে বারাসত কিংবা কলকাতা যেতে চান না। বনগাঁ শহরের বাসিন্দা তথা সাহিত্যিক বিভাস রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘সড়ক পথে কলকাতা যাওয়ার কথা ভাবতেই ভুলে গিয়েছি। কারণ গাড়িতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। সঙ্গে ভোগান্তি। আমরা চাই যশোর রোড দ্রুত সম্প্রসারণ হোক।’’

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উড়ালপুলের জন্য জবরদখল হয়ে থাকা দোকানপাট সরাতে হবে এবং রাস্তার পাশের গাছ কাটতে হবে। ওই কাজের জন্য যশোর রোডের জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হবে। তার পর জানা যাবে কতটা সরকারি জমি জবর দখল হয়ে রয়েছে। উড়ালপুলের জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা।প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দোকানের পাশাপাশি কিছু অফিস এবং ব্যাঙ্কের একাংশ ভাঙা পড়তে পারে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বনগাঁ মহকুমার সহকারি বাস্তুকার জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উড়ালপুল তৈরির জন্য ৬৬টি গাছ কাটতে হবে। যার জন্য বন দফতরের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।’’ বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস জানান, উন্নয়ণের স্বার্থে সড়ক সম্প্রাসারণ জরুরি। সেটি মানুষকে বোঝানো হবে। স্থানীয় পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের আশ্বাস, ‘‘বনগাঁর মানুষের উন্নয়ণের স্বার্থে যারা জবরদখল করে আছেন তারা সহযোগিতা করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। পুরসভার পক্ষ থেকেও তাদের পূনর্বাসনের পদক্ষেপ করা হবে।’’ বনগাঁ চেম্বার অব কমার্সের সহ সম্পাদক দিলীপ মজুমদার বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে বনগাঁর মানুষ যশোর রোড চওড়া করবার দাবি করছেন। আমরা এই কাজে প্রশাসনকে সহযোগিতা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন