বিয়েতে জোর করলে বলে দেব স্যারকে

নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। নারাজ ছাত্রী সরাসরি প্রধান শিক্ষককে খবর দেয়। এরপরেই পুলিশ ও চাইল্ড লাইন গিয়ে ওই ছাত্রীর বিয়ে আটকায়। গোপালপুরের ব্যাসপুর হাইস্কুলে মেয়েটি এখন দশম শ্রেণিতে পড়ছে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

গোপালনগর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ১২:৪০
Share:

সচেতনতা শিবির। নিজস্ব চিত্র

নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। নারাজ ছাত্রী সরাসরি প্রধান শিক্ষককে খবর দেয়। এরপরেই পুলিশ ও চাইল্ড লাইন গিয়ে ওই ছাত্রীর বিয়ে আটকায়।

Advertisement

গোপালপুরের ব্যাসপুর হাইস্কুলে মেয়েটি এখন দশম শ্রেণিতে পড়ছে। গোপালনগরে এমন নজির এই প্রথম বললেই চলে। কারণ, এই এলাকায় প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে নাবালিকা বিয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ছাত্রীরাও বাড়ির চাপে বিয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হয়।

তবে নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে গোপালনগরে পুলিশের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিশোরীদের সচেতন করতে তাদের নিয়ে স্কুলে স্কুলে শিবির করছে পুলিশ। সঙ্গে থাকছেন চাইল্ড লাইন ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শনিবার দু’টি শিবির হয়েছে ব্যাসপুর হাইস্কুল ও আকাইপুর নব গোপাল হাইস্কুলে। ছিলেন বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়, গোপালনগর থানার ওসি অয়ন চক্রবর্তী, চাইল্ড লাইন সংস্থার বনগাঁর কো-অর্ডিনেটর স্বপ্না মণ্ডল, বনগাঁ মহিলা থানার ওসি চায়না পাল।

Advertisement

অনিলবাবু ছাত্রীদের বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে যদি জোর করে তোমাদের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তোমরা সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বা পুলিশকে জানাবে। আমরা পদক্ষেপ করব।’’ একই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, অচেনা কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে না। ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিশোরীদের সচেতন হওয়া উচিত। পুলিশের পক্ষ থেকে থানার ফোন নম্বর, ওসি, এসডিপিও ফোন নম্বর ছাত্রীদের দেওয়া হয়েছে।

ব্যাসপুরের ঘটনার পরে অবশ্য ছাত্রীরা সচেতন হয়েছেন বলে দাবি প্রধান শিক্ষক স্বরূপরাজ রায়চৌধুরীর। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘটনার পর আর স্কুলের কোনও ছাত্রীর বিয়ের ঘটনা ঘটেনি। তবু বলা হয়েছে সমস্যায় পড়লে দ্রুত তারা যেন ওই নম্বরে যোগাযোগ করে।’’

স্বপ্নাদেবী ছাত্রীদের বোঝান, আঠারো বছরের নীচে বিয়ে করলে কী কী শারীরিক অসুবিধা হতে পারে। সংস্থার টোল ফ্রি নম্বর (১০৯৮) উল্লেখ করেন তিনি।

নবগোপাল হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী, বনানী হালদার, রাজবতী সাধুখাঁ, মাম্পি রায়েরা শিবির শেষে জানায়, এখন থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে শিক্ষক বা পুলিশকে জানিয়ে দেবে তারা। আশেপাশে যদি কেউ নাবালিকা বিয়ে দেন। তা হলে পুলিশকে জানাবে এই ছাত্রীরাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন