প্রতীকী ছবি।
মশা নিধন নয়, ডেঙ্গি রোধে সচেতনতাই একমাত্র উপায়। আর সেই লক্ষ্যে প্রথম ও প্রধান পদক্ষেপ হল জমা জল দূর করা। এমনই মনে করছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এক কর্তার কথায়, ‘‘মশা মারতে কামান দাগলে ঘোষপাড়ার মশা বোসপাড়ায় গিয়ে জমা হবে। ডেঙ্গি দূর হবে না।’’
জেলা জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ সামাল দিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। কর্তারা জানাচ্ছেন, পুরসভা ও পঞ্চায়েতের স্বল্প পরিকাঠামো যথেষ্ট নয়, স্কুলশিক্ষক থেকে পড়ুয়া এমনকী গ্রামসেবক ও জলবন্ধু-সহ পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকার সব স্তরের কর্মীকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচারে শামিল করা হচ্ছে। জেলা শাসকের দফতর থেকে সমস্ত ব্লক, পুরসভা ও পঞ্চায়েতে বিশেষ নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এমনকী ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে খেতমজুর ও জনমজুরদেরও ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রচার ও নজরদারির কাজে নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। জন ও খেতমজুররা মূলত নিকাশি নালা ও খাল পরিষ্কারের কাজ করছেন।
দক্ষিণ শহরতলির এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘জমা জল সরানোর বিষয়টি মানুষের হাতের মুঠোতেই রয়েছে। তাতে গুরুত্ব দিলেই ডেঙ্গির প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তরুণ রায়ের কথায়, এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ শহরতলি-সহ গোটা জেলায় সরকারি ভাবে ১,৩৩৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা দুই।’’
জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘প্রচারের ক্ষেত্রে পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তরে কর্মী সংখ্যা অত্যন্ত কম। তাই বিশেষ নির্দেশ জারি করে সমাজের সর্ব স্তরের মানুষকে শামিল করা হচ্ছে। প্রতি পরিবারের এক জন সদস্যকেও যদি সচেতন করা যায়, তা হলেই ডেঙ্গি প্রতিরোধ করা সম্ভব।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জ্বর হলেই মানুষ ডেঙ্গি-আতঙ্কে ভুগছেন। কিন্তু জ্বর হওয়ার পাঁচ থেকে সাত দিন পর রক্ত পরীক্ষা করলে তবেই ডেঙ্গি ধরা পড়বে। তার আগেই রক্ত পরীক্ষার ফলে ডেঙ্গি ধরা না পড়ায় মানুষ চিন্তামুক্ত হয়ে পড়ছেন। কিন্তু পরে দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ওই রোগী। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গির উপসর্গ সম্বন্ধেও সচেতন করা প্রয়োজন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর জানান, ‘‘দক্ষিণ শহরতলি-সহ জেলার ২৯টি ব্লকে ডেঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষ অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছে। জেলার প্রতিটি ব্লকে ডেঙ্গি প্রতিরোধে ২ লক্ষ টাকা বিশেষ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী এখনও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।’’