বাণীকণ্ঠ ফের উদ্ধারের আশ্বাস

পরিস্থিতি সামলাতে ত্রাণ শিবিরও খুলতে হয়েছে মধ্যমগ্রাম পুরসভাকে। দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা এড়াতে সম্প্রতি পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে জেলা প্রশাসন বৈঠকও করে। প্রশাসন সূত্রের খবর, অবরুদ্ধ ওই চার কিলোমিটার এলাকা দখল হয়ে রয়েছে।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০১:০৪
Share:

বাণীকণ্ঠ খালের বর্তমান চেহারা। নিজস্ব চিত্র

মাত্র চার কিলোমিটার পথ। খাল ভরাট করে ওই অংশেই তৈরি হয়েছে ঘর-বাড়ি। দীর্ঘ খালকে দু’ভাগ করেছে ওই অংশ। খালের দু’ধারে জমছে পলিথিন-সহ বিভিন্ন বর্জ্য। জলধারণ ক্ষমতাও হারিয়েছে খালটি। বাণীকণ্ঠ খালের এই অবস্থার জন্য কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে মধ্যমগ্রাম, বারাসত পুরসভা এবং এয়ারপোর্টের বিস্তীর্ণ এলাকা।

Advertisement

পরিস্থিতি সামলাতে ত্রাণ শিবিরও খুলতে হয়েছে মধ্যমগ্রাম পুরসভাকে। দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা এড়াতে সম্প্রতি পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে জেলা প্রশাসন বৈঠকও করে। প্রশাসন সূত্রের খবর, অবরুদ্ধ ওই চার কিলোমিটার এলাকা দখল হয়ে রয়েছে। সেখান থেকে জমি কিনে বড় নর্দমা কেটে খালের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। যদিও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষার সময়ে কিছু না কিছু ভাবনা-চিন্তা করা হয়। জল নামতেই একই অবস্থায় আটকে থাকে বাণীকণ্ঠ খাল।

কাজিপাড়া থেকে শুরু করে বারাসত পুর এলাকার সাড়ে সাত কিলোমিটার পেরিয়ে মধ্যমগ্রামে ঢুকেছে বাণীকণ্ঠ খাল। সেখানে দেড় কিলোমিটার পথ গিয়েই হারিয়ে গিয়েছে খালটি। চার কিলোমিটার পরে কেমিয়া খামারপাড়া প়ঞ্চায়েতের নালতের পোল থেকে ফের খাল শুরু হয়েছে। তার পরে হাড়োয়ার কুলটি খাল হয়ে সেটি মিশেছে বিদ্যাধরী নদীতে। কিন্তু মধ্যমগ্রামের বাদু রোড সংলগ্ন মাঠপাড়া এলাকায় হারিয়ে গিয়েছে ওই চার কিলোমিটার অংশ। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ওই জমিতে রয়েছে একটি বেসরকারি কলেজ। বোঝার উপায় নেই যে, কখনও এখানে একটি খাল ছিল।

Advertisement

জমা জলের সমস্যা মেটাতে গত বছরই অনেক টাকা খরচ করে সংস্কার হয়েছে বাণীকণ্ঠ খালটি। কিন্তু জল বেরোনোর দু’ধারের মুখ আটকে থাকায় এর পরেও হাল ফেরেনি। এর ফলে ভুগছেন বারাসতের সরোজ পার্ক, ক্ষুদিরাম পল্লি, বিধান পার্ক, কালিকাপুর, উত্তরায়ণ, কুইপুকুর, বিজয়নগর ছাড়াও মধ্যমগ্রাম, এয়ারপোর্টের বিস্তীর্ণ এলাকায় মানুষ। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, বর্ষায় আবর্জনা ও পলিথিন ভেসে আসে রাস্তায়। এমনকী নর্দমার নোংরা জলের সঙ্গে সেগুলি ঘরেও ঢুকে যাচ্ছে। বৃষ্টি থামলেও এই সব এলাকা থেকে জল নামে না সহজে।

মধ্যগ্রামের বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘খালটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নিকাশি নিয়ে দুর্ভোগ হচ্ছে মানুষের। সমাধান খুঁজতে জেলা প্রশাসনে বৈঠকও হয়েছে।’’ সেখানে ঠিক হয়, ২৫ ফুট গভীর আর সাড়ে সাত মিটার চওড়া একটি বড় নর্দমা কেটে ওই চার কিলোমিটার অংশের খালের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ জন্য জমি কেনা এবং কাজে যা খরচ হবে, প্রয়োজনে সে টাকা বারাসত এবং মধ্যমগ্রাম দুই পুরসভা ভাগ করে দেবে।’’ শীঘ্রই সে কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন দুই চেয়ারম্যানই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement