BDO

Panchayat: মহিলা সদস্যের স্বামী-ছেলে নয়, সভায় আসতে হবে নিজেকেই

পুরুষ প্রতিনিধিরাই যদি সব কিছুতে মাতব্বরি করবেন, তা হলে মহিলা আসন সংরক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের ক্ষমতায়নের দিকটি তো অবহেলিতই থেকে যাবে।

Advertisement

নির্মল বসু 

বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২১ ০৭:১৩
Share:

কঠোর: নিজের দফতরে বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।

নিয়মটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সে কথা মনে করিয়ে দিতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। একদল দু’হাত তুলে প্রশংসা করছেন। অন্য এক অংশ আবার নানা দ্বিধা, সংশয়ের কথা জানাচ্ছেন।

Advertisement

সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস এক নোটিসে জানিয়েছেন, প্রতিনিধি সভায় শুধুমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই উপস্থিত থাকতে পারবেন।

হঠাৎ এমন নোটিস কেন?

Advertisement

প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, সচরাচর দেখা যায়, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত মহিলা সদস্যদের অনেকে প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির থাকেন না। তাঁর স্বামী, ছেলে, ভাই, পুরুষ আত্মীয় বা কোনও পুরুষ প্রতিনিধি ওই মহিলার হয়ে বৈঠকে হাজিরা দেন। মতামতও জানান। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাঁদের ভূমিকা থাকে। সুপর্ণা বলেন, ‘‘এখন থেকে কোনও পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান, মহিলা সদস্য এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের হয়ে কোনও প্রতিনিধি সভায় থাকতে পারবেন না।’’ সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে বাস্তবায়িতও হতে দেখা গিয়েছে। ৮ নভেম্বর ব্লক অফিসের সভায় মহিলা জনপ্রতিনিধিদের প্রতিনিধিদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের একটি সূত্রের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পঞ্চায়ত-স্তরের মহিলা জনপ্রতিনিধিরা বাড়িতেই থাকেন। যে আত্মীয়েরা আসেন, তাঁদের গাড়িতে ‘পঞ্চায়েত প্রধান’, ‘পঞ্চায়েত সদস্য’ ‘পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি’ এমন স্টিকারও সাঁটানো থাকতে দেখা যায়। তাঁরাই সব প্রশাসনিক কাজকর্ম করেন। বিডিওর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুহেলিকা পরভীন বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। এই নিয়ম আগে থেকেই ছিল। কিন্তু বিডিও সেই নিয়মের বাস্তবায়ন করায় আমাদের এলাকার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হল।’’ জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘‘বাচ্চা ছোটো বলে স্বামী পঞ্চায়েতের কাজ দেখাশোনা করেন। তবে বিডিও ভাল নিয়ম করেছেন।’’

সকলেই যে বিডিও-র সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন, তা নয়। এক মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে জিন্না আজিজ বলেন, ‘‘এর ফলে অব্যবস্থা দেখা দিতে পারে।’’ বিধায়ক আব্দুর রহিম দিলু বিডিওর সিদ্ধান্তকে ‘ভাল’ বললেও আরও কিছু মতামত জুড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনপ্রতিনিধি এবং বিধায়কের সঙ্গে আলোচনার দরকার ছিল।’’ তাঁর মতে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মহিলারা হঠাৎ করে প্রশাসনিক কাজকর্ম শিখতে পারেন না। তাই তাঁদের সাহায্য করার জন্য পুরুষেরা থাকেন। কিন্তু পুরুষ প্রতিনিধিরাই যদি সব কিছুতে মাতব্বরি করবেন, তা হলে মহিলা আসন সংরক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের ক্ষমতায়নের দিকটি তো অবহেলিতই থেকে যাবে, মনে করেন প্রশাসনের অন্দরের অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন