নির্দলের সঙ্গে জোট বেঁধে পঞ্চায়েত গড়বে বিজেপি

তৃণমূলের টিকিট না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে জিতেছেন অনেকেই। তাঁরাই এ বার বিরোধীদের সঙ্গে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন অনেক জায়গায়।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০২:৪০
Share:

তৃণমূলের টিকিট না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে জিতেছেন অনেকেই। তাঁরাই এ বার বিরোধীদের সঙ্গে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন অনেক জায়গায়।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার মহকুমা জুড়ে বেশ কয়েকটি ব্লকে নির্দল ও বিজেপি জোট বেঁধে এ বার পঞ্চায়েত বোর্ড গড়তে চলেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। মগরাহাট ২ ব্লকে দীর্ঘদিন ধরে শাসকদলের দখলে ছিল উড়েলচাঁদপুর, ধনপোতা পঞ্চায়েত। সেখানে এ বার বিজেপি ও নির্দল পঞ্চায়েত বোর্ড তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। নৈনান পঞ্চায়েতে ১৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৮টি, কংগ্রেস ও সিপিএম ১টি করে। বাকি ৮টি আসনে তৃণমূল জয়ী হয়েছে। আবার গোকর্নি পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৬টি, নির্দল ২টি, তৃণমূল ৮টি আসন পেয়েছে। জুগদিয়া পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২, কংগ্রেস ৪, সিপিএম ৪ ও বিজেপি একটি আসনে জয়ী হয়েছে।

বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ গাববেড়িয়া পঞ্চায়েতে। ওই পঞ্চায়েতে ১৩টি সদস্যদের মধ্যে বিজেপি একাই ৮টি আসন পেয়েছে। শাসকদল ৫টি আসন পেয়েছে। চাঁদপুর চৈতন্যপুর পঞ্চায়েতে মোট ১৫টি আসনের মধ্যে বিজেপি দখল করেছে ৬টি, নির্দল ২টি ও সিপিএম ১টি আসন পেয়েছে। বাকি ৬টি আসন তৃণমূলের দখলে। জোট তৈরি হলে তৃণমূল বোর্ড গড়তে পারবে না বলে এলাকারা নেতারা জানিয়েছেন। আবার কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৭টি, নির্দল ২টি, তৃণমূল ৭টিতে জয়ী হয়েছে। সেখানেও নির্দলকে সঙ্গে নিয়ে বোর্ড গড়তে চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। ওই ব্লকের দক্ষিণ বিষ্ণুপুরেও বিজেপি ভাল ফল করেছে। ওই পঞ্চায়েতে ১৭টি আসনের মধ্যে ৫টি পেয়েছে বিজেপি। ধনুরহাট পঞ্চায়েতে ১৫টির মধ্যে ৬টি আসন দখল করেছে পদ্মফুল। নির্দল ও বিজেপি জোট তৈরি হলে তৃণমূল বিপাকে পড়বে কুলপি, রায়দিঘি, মগরাহাট ১, জয়নগর ১ ও ২ এবং কুলতলি ব্লকগুলিতেও।

Advertisement

নির্দল বা বিজেপির বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী শাসকদলই—এমনটাই মনে করেন তৃণমূলের কেউ কেউ। তাঁদের ব্যাখ্যা, ক্ষমতা ও টাকা দু’দিক শক্তিশালী করতে গিয়ে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে। কারণ, শাসকদলের যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছেন বা যাঁদের মাথায় নেতাদের হাত রয়েছে, তাঁরাই এলাকায় ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সিপিএম ছেড়ে আসা নেতারাও মূল তৃণমূলের লোকেদের উপর নিজেদের মত জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছেন, যা কোনও ভাবেই মূল তৃণমূলের লোকজন মেনে নিতে পারছেন না। এ ভাবেই তৈরি হচ্ছে বিক্ষুব্ধ। পরে এঁরাই নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। শাসকদলের একাংশের অভিযোগ, গোলমাল হচ্ছে টাকার ভাগবাঁটায়োরা নিয়েও। তা ছাড়া ভোটে টিকিট দেওয়া নিয়ে ঝামেলা তো হয়েইছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সহ-সভাপতি শক্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ অনুযায়ী টিকিট দেওয়া হয়েছে। দলের বাইরে যাঁরা চলে গিয়েছেন, তাঁরা আর দলে ফিরতে পারবেন না বলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন। তবে এ নিয়ে কোনও অশান্তি দল চায় না। আমরা কথা বলে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন