যশোর রোডে শুকনো ডাল কাটার দাবি এলাকাবাসীর

ফের ডাল ভেঙে জখম হলেন যুবক

গাছের ডাল ভেঙে জখম হলেন এক মোটরবাইক চালক। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের গাইঘাটার জলেশ্বর মোড়ে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০২
Share:

গাছের ডাল ভেঙে জখম হলেন এক মোটরবাইক চালক। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের গাইঘাটার জলেশ্বর মোড়ে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, জখম যুবকের নাম নীতিশ ঘোষ। ওই যুবকের বাড়ি স্থানীয় চাঁদপাড়া এলাকায়। তিনি এখন ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়ার একটি ব্যাঙ্কে কাজ করেন নীতিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বাইক নিয়ে হাবড়া থেকে যশোর রোড ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। জলেশ্বর মোড়ের কাছে হঠাৎ সড়কের পাশে থাকা গাছ থেকে মোটা ডাল তাঁর বাইকের উপর পড়ে। তিনি ছিটকে পড়েন় রাস্তায়। বাঁ পায়ের হাড় ভেঙে যায়। বাইকটিরও ক্ষতি হয়।

Advertisement

খবর পেয়ে গাইঘাটা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নীতিশকে উদ্ধার করে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ দিনের ঘটনার পর এলাকার মানুষ ও যান চালকেরা ফের যশোর রোডের দু’পাশে থাকা গাছের মরা শুকনো ডাল কাটার দাবি তুলেছেন।

সম্প্রতি যশোর রোডে গাছের ডাল ভেঙে কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে মৃত্যু ও জখমের ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় মানুষ গাছে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা ডাল কাটার দাবি তুলে পথ অবরোধ বিক্ষোভও করেছেন। তারপরও সমস্যা মেটেনি।

প্রতিবছরই বর্ষার সময় গাছের ডাল ভেঙে পড়াটা এখন রুটিন হয়ে গিয়েছে। ২০১২ সালে গাইঘাটার মণ্ডলপাড়া এলাকায় গাছে কেটে রাখা একটি ডাল ভেঙে চলন্ত অটোর উপর পড়লে পাঁচ জন মারা যান। চারিদিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি।

কতগুলো গাছে শুকনো ও মরা ডাল রয়েছে তা জানতে সম্প্রতি বনগাঁ ও গাইঘাটা থানার পুলিশ আলাদা ভাবে নিজেদের থানা এলাকায় সমীক্ষা করেছেন। বনগাঁ থানার পুলিশের তরফে বিপজ্জনক ডাল থাকা গাছগুলোর ছবিও তোলা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে তা জমাও দিয়েছে পুলিশ।

তবে পেট্রাপোল থেকে হাবড়া পর্যন্ত কিছু গাছে শুকনো ডাল বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে এখনও। এক অটো চালক বলেন, ‘‘ঝড়-বৃষ্টির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাই। অনেক সময় দাঁড়িয়ে পড়তে হয়।’’ ওই সড়ক দিয়ে রোজ হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। যানবাহনের চাপও প্রচুর। কিন্তু যাত্রী সুরক্ষা বলে কিছু নেই। অনেকেরই দাবি তাঁরা গাছ কাটার বিরোধী। কিন্তু মানুষের জীবনের স্বার্থে শুকনো মরা ডাল কাটা হোক।

এক বৃক্ষপ্রেমী বলছিলেন, ‘‘শুকনো মরা ডাল কাটা জরুরি। কিন্তু দেখতে হবে ওই কাজ করতে গিয়ে যেন গাছ কাটা না হয়।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, গাছে গোবরের ঘুঁটে দেওয়া হয়। গাছের গোড়ায় গরম চা ও জল ফেলা হচ্ছে। গাছে পেরেক মেরে বিজ্ঞাপন মারা হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে কাঠ চোরদের দৌরাত্ম্য। এ সবের কারণে গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোর রোডের পাশে থাকা গাছের মরা, শুকনো ও বিপজ্জনক ডাল শনাক্ত করা হয়ে গিয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বাস্তুকার (ডিভিশন ৫) অজয়শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘আদালতের অনুমতি মিলেছে। শীঘ্রই মরা শুকনো ডাল কাটার কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন