গারুলিয়াও হাতছাড়া হতে বসেছে বিজেপির 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share:

গারুলিয়া পুরসভা।—ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের পরে ব্যারাকপুর মহকুমার অন্যান্য পুরসভার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল গারুলিয়া পুরসভাও। সোমবার বিজেপির হাতে যাওয়া সেই গারুলিয়ার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা।

Advertisement

এক সময়ে সিংহভাগ সদস্য বিজেপিতে যোগ দিলেও বর্তমানে তৃণমূল শিবিরেই রয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর। তার মধ্যে রয়েছেন পুরপ্রধান সুনীল সিংহের দাদা এবং ভাই। সুনীল জানান, দ্রুত বৈঠক ডেকে তিনি অনাস্থার মুখোমুখি হতে চান। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল অনৈতিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাউন্সিসলর ভাঙিয়েছিল।

সোমবার গারুলিয়া পুরসভার মোট ১২ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধানকে অপসারণের চিঠি দেন। সেই চিঠি পাঠানো হয় ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকেও। গারুলিয়া পুরসভার মোট কাউন্সিলরের সংখ্যা ২১ জন। তার মধ্যে ২০ জনই ছিলেন তৃণমূলের। বাকি এক জন সদস্য ফরওয়ার্ড ব্লকের। তার মধ্যে ১২ জন সদস্য বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে চারজন তৃণমূলে ফিরেছেন।

Advertisement

সুনীলকে অপসারণের চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সুনীলের দাদা চন্দ্রভান সিংহ এবং ভাই সঞ্জয় সিংহ। সঞ্জয় তৃণমূলে না ছাড়লেও চন্দ্রভান বিজেপিতে গিয়েছিলেন। দু’জনেই এ দিন জানান পুরপ্রধান এবং বর্তামান বোর্ডের কাজে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। সেই জন্যই পুরপ্রধানের অপসারণ চান তাঁরা।

পুরপ্রধান সুনীলকে বছর দুয়েক আগে তৃণমূল নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করে। সেই ভোটে জিতে সুনীল বর্তমানে বিধায়কও।

ভাটপাড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ সুনীলের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। লোকসভা ভোটের আগে অর্জুন বিজেপিতে যোগ দেন। সেই সময় প্রায় রোজই রটত যে সুনীলও বিজেপিতে যাচ্ছেন। কিন্তু ভোট ফুরনো পর্যন্ত সুনীল তৃণমূলেই থেকেছেন।

এমনকী, লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দু’দিনের মধ্যে নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া, হালিশহর পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর যখন দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন, সুনীল তখনও তৃণমূলেই ছিলেন। রাজনৈতিকমহলের মতে, সুনীলকে তৃণমূলে রাখাটা ছিল অর্জুনের ‘স্ট্র্যাটেজি’। মাসখানেক আগে, ১২ জন কাউন্সিলর নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন সুনীল। গারুলিয়া পুরসভা হাতছাড়া হয় তৃণমূলের।

কিন্তু তার পরে মাসখানেও কাটেনি। গারুলিয়া পুরসভায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল বিজেপি। তবে তার শুরুটা হয়েছিল আগেই। গারুলিয়া পুরসভা হাতছাড়া হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হালিশহর এবং কাঁচরাপাড়া পুরসভা পুনরুদ্ধার করে তৃণমূল। দুই পুরসভার বেশিরভাগ কাউন্সিলর তৃণমূলে ফেরেন। তার পরে নৈহাটি পুরসভাতেও তৃণমূল কাউন্সিলরদের ‘ঘর-ওয়াপসি’ হয়। ব্যারাকপুর মহকুমার মধ্যে কেবল ভাটপাড়া এবং গারুলিয়া পুরসভাই ছিল বিজেপির দখলে। এ বার গারুলিয়াও বিজেপির হাতছাড়া হওয়ার পথে।সুনীল বলেন, ‘‘তৃণমূল আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ আনতে পারেনি। তারা শুধু মাত্র ভাল পরিষেবা দিতে চায় বলে আমার অপসারণ চেয়েছে। দেখা যাক, আমার থেকে ভাল পরিষেবা দিলে আমিও ওদের সমর্থন করব। আর কয়েক মাস পরেই তো ভোট। তখন দেখা যাবে, কার জনভিত্তি কত।’’ নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘বিজেপি ভয় দেখিয়ে রাতারাতি আমাদের কাউন্সিলরদের দলে টেনেছিল। তাঁদের ভয় ভেঙে গিয়েছে। আর সাধারণ মানুষও বিজেপির এই রাজনীতি ধরে ফেলেছে। ভোট হলেই তার প্রমাণ মিলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন