প্রতীকী ছবি
হোম ডেলিভারির কর্মী এসে বারবার ডেকেছেন। ডাকাডাকি করেছেন বাড়িওয়ালাও। তাঁর সাড়া পাননি কেউই। শেষে ভেজানো দরজা খুলে বিছানার উপরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মিলল সেই প্রৌঢ়ের দেহ। বৃহস্পতিবার সকালে এমনই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পানিহাটির শান্তিনগরে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে খড়দহ থানার পুলিশ।
মৃত প্রৌঢ়ের নাম প্রতুল চক্রবর্তী (৫২)। স্থানীয়েরা জানান, পানিহাটি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠপোল শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা শ্যামল মজুমদারের বাড়িতে তিন দিন আগে ভাড়া এসেছিলেন ওই প্রৌঢ়। পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে টিফিন কৌটো নিতে আসেন হোম ডেলিভারির এক কর্মী। তিনি ডাকাডাকি করলেও প্রতুলবাবু সাড়া দেননি। এর পরে ওই কর্মী শ্যামলবাবুকে বিষয়টি জানান। ঘরের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন তিনিও। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, হঠাৎ শ্যামলবাবু এবং ওই কর্মী খেয়াল করেন প্রতুলবাবুর ঘরের দরজা ভিতর থেকে আটকানো নেই, ভেজানো রয়েছে মাত্র। এর পরেই দরজা খুলে তাঁরা প্রৌঢ়ের ওই অবস্থা দেখতে পান। খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
শ্যামলবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, তিন দিন আগে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময়ে প্রতুলবাবু নিজেকে গুরুগ্রামের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, বাগুইআটির একটি ওষুধ কোম্পানির কর্তা তিনি। সোদপুরে ওই সংস্থার একটি শাখা অফিস খোলা হবে বলেই কাছাকাছি বাড়ি নিতে চান বলে দাবি করেছিলেন প্রতুলবাবু। আবার শ্যামলবাবুকে সেখানে চাকরি পাইয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়। তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, স্থানীয় এক ব্যক্তি অমিতাভ রায়চৌধুরীর মধ্যস্থতায় ওই প্রৌঢ়কে মাসে চার হাজার টাকায় ঘরটি ভাড়া দেন শ্যামলবাবু। বাড়ির একতলায় থাকেন শ্যামলবাবু, দোতলায় ভাড়া ছিলেন ওই প্রৌঢ়। শ্যামলবাবু এ দিন জানান, কয়েক দিনের মধ্যে স্ত্রীকেও নিয়ে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রতুলবাবু। তবে কাউকেই নিজের ঘরে ঢুকতে দিতেন না ওই প্রৌঢ়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন শীতের পোশাক পরা অবস্থাতেই বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা যায় প্রতুলবাবুকে। তাঁর গলায় কাপড়ের পাড়ের ফাঁস ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীরা শ্যামলবাবু ও আমিতাভবাবুকে আটক করেছেন। ব্যারাকপুরের ডেপুটি কমিশনার (জোন-২) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে এটি খুন। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’