পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন মহিলা। নিজস্ব চিত্র
মহালয়ার সকালে গঙ্গার ঘাটে তখন চলছে তর্পণ। মন্ত্রোচ্চারণের শব্দে ঢাকা পড়ে গিয়েছে অন্য সব শব্দ। এরই মধ্যে এক মহিলাকে ভেসে যেতে দেখেন কয়েকজন। সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও তা পাড়ে পৌঁছোচ্ছিল না। কিন্তু হাত নেড়ে তিনি সাহায্য চাইছিলেন।
এই দৃশ্য দেখে জলে ঝাঁপ দিয়ে ওই মহিলাকে বাঁচালেন হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস। োদপুরের ১২ মন্দির ঘাটের ঘটনা। পুলিশ মহিলাকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেন।
অম্বরীশ ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক। সোমবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি গঙ্গার ঘাটে তর্পণ দেখতে গিয়েছিলেন। তখন সকাল সাড়ে সাতটা। সবে ভাটা শুরু হয়েছে। আচমকা তাঁর নজরে আসে কেউ একজন মাঝ গঙ্গা দিয়ে ভেসে যাচ্ছেন। তিনি হাত নাড়িয়ে চিৎকার করছেন। কিন্তু তাঁর সেই চিৎকার কারও কানে আসছে না। অম্বরীশ বলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছিল, উনি সাহায্য চাইছেন। কিছু না ভেবে স্ত্রীর হাতে মোবাইল এবং কাগজপত্র ধরিয়ে দিয়ে আমি জলে ঝাঁপ মারি।’’
অম্বরীশ জানান, কাছে যেতে বুঝতে পারি, মহিলা তলিয়ে যাচ্ছেন। অম্বরীশ চিৎকার করে বলতে থাকেন, মহিলা যেন ভেসে থাকার চেষ্টা করেন। এর পরের ঘাট মহৎসবতলা। ওখানে জলের ঘুর্ণি থাকে। তার আগে মহিলাকে উদ্ধার করতে না পারলে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘কোনও রকমে সাঁতরে কাছে কাছে পৌঁছে উদ্ধার করি। পারের দিকে কিছুটা আনার পরে একটি ডিঙি নৌকা পাই। তাতে ওই মহিলাকে তুলি। তিনি ততক্ষণে প্রায় জ্ঞান হারিয়েছেন।’’ জ্ঞান ফিরতেই ঘনঘন বমি করতে শুরু করেন মহিলা। পাড়ে নিয়ে আসার বেশ কিছুক্ষণ পরে সুস্থ বোধ করেন।
অম্বরীশই ফোন করে খড়দহ থানায় খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মাঝবয়সী মহিলা তাঁদের জানান, সোদপুর হাউজিং কোয়ার্টারে থাকেন তিনি। এ দিন গঙ্গায় স্নান করতে এসেছিলেন। কিন্তু ভাটার টানে আচমকাই নদীর গভীরে চলে যান। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।