মৃত অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়।
বাওরের জল থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের দেহ। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার সোনাটিকারি এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় (৩৪)। তিনি শ্যামনগর এলাকায় একটি ব্যাটারি তৈরির কারখানায় ডেপুটি ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। খড়দহ থানার দক্ষিণ পানশিলার একটি আবাসনে থাকতেন।
অর্ঘ্যর মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে দাবি পরিবারের। গাইঘাটা থানায় মৃতের বাবা সুভাষচন্দ্র মুখোপাধ্যায় খুনের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যায় বৌমাকে ফোন করে কেউ জানান, ছেলের দুর্ঘটনা ঘটেছে। বনগাঁ মহকুমা হাসাপাতালে রয়েছে। রাতে হাসপাতালে এসে জানতে পারি, মারা গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ছেলে সাঁতার জানত। জলে ডুবে মৃত্যু হতে পারে না। অর্ঘ্যর কাকা শশাঙ্ক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওকে খুন করা হয়েছে। আমরা ঘটনার প্রকৃত তদন্তের দাবি করেছি পুলিশের কাছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। সিআই গাইঘাটা পার্থ সান্যাল জানান, আপাতত চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে বর্ধমানের বাসিন্দা অর্ঘ্য বিটেক পাশ করে কয়েক বছর আগে খড়দহ থানা এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সোমবার সকালে বাড়িতে বলেছিলেন পিকনিকে যাচ্ছেন। কিন্তু কোথায় যাচ্ছেন, তা কিছু জানাননি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার গাড়ি করে অর্ঘ্য আসেন গোপালনগর থানার চৌবেড়িয়া এলাকায় এক যুবকের বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক বন্ধু। গাড়িটি অর্ঘ্য নতুন কিনেছিলেন। গাড়ির চালক ছিলেন জগদ্দলের এক যুবক। সকলে মিলে গাইঘাটা থানার সোনাটিকারি এলাকায় একটি বাওরের কাছে আসেন। মদ্যপান করেন। পরে বাওরে স্নান করতে নামেন। সেখানেই ডুবে যান অর্ঘ্য।
প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা বলেন, ‘‘আমি বাওরে মাছ ধরছিলাম। হঠাৎ বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনতে পাই। দেখি, দূরে এক যুবক জলে ডুবে যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গীরা জল থেকে উঠে গ্রামের লোকজনকে ডাকতে লাগলেন।’’ আশেপাশের লোক এসে জল থেকে উদ্ধার করেন অর্ঘ্যকে।
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ওই যুবককে মৃত বলে জানিয়ে দেন। অভিযোগ, দেহ হাসপাতালে রেখে বন্ধুরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বনগাঁ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের আটকায়। পরে গাইঘাটা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় সকলকে।