যুবকের মৃত্যুতে উত্তাল বাদুড়িয়া

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

Advertisement

বাদুড়িয়া: এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জনতার ইটবৃষ্টি, পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে উত্তাল হয়ে উঠল বাদুড়িয়ার চণ্ডীপুর গ্রাম। দেহ রেখে ঘণ্টা চারেক ধরে অবরোধ করে রাখা হয় তেঁতুলিয়া-মছলন্দপুর রাস্তা। দেহ উদ্ধারে গেলে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। উভয় পক্ষের কয়েক জন জখম হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক জনকে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কুন্তল বিশ্বাস (২৫)। চণ্ডীপুরের আমতলায় তাঁর বাড়ি। গ্রামবাসীদের দাবি, ছক কষেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে কুন্তলকে। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমতলার বাসিন্দা কালিদাস বিশ্বাস কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। স্ত্রী রেখা অনুষ্ঠান বাড়িতে কাজ করেন। তাঁদের এক ছেলে কুন্তল বিএ পাস করে কলকাতায় রং মিস্ত্রির কাজ করতেন।

কলকাতা থেকে সোমবার রাতে বাড়ি ফিরেছিলেন কুন্তল। মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোন। দুপুরের দিকে পুলিশের কাছে খবর আসে, শিবপুর গ্রামের সর্ষে খেতে এক জনের দেহ পড়ে আছে। পুলিশ এসে দেখে, গলায় জামার ফাঁস লাগানো অবস্থায় পড়ে কুন্তলের দেহ। তখনও যুবকের পরিচয় জানা যায়নি। দেহ উদ্ধার করে ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ে গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে যান। কুন্তলকে খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে শুরু হয় পথ অবরোধ। দেহ চণ্ডীপুর বাজারে বড় রাস্তার উপরে রেখে মাইকে লোক ডাকা হতে থাকে।

পুলিশ বাহিনী যাতে এলাকায় ঢুকতে না পারে, সে জন্য রাস্তার উপরে বড় বড় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখে জনতা।

বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়ে দেহ ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। জনতা তাতে রাজি ছিল না। উল্টে কাঠ, বাঁশ, লাঠি, ইট হাতে পুলিশকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বিবাদ বাধে। একটা সময়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল উড়ে আসতে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চালায় পুলিশ।

কুন্তলের আত্মীয় অমিয় বাইন, বিবেকানন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওর মোবাইলে একটা ফোন এসেছিল। তারপরেই বাড়ি থেকে বেরোয়। দুষ্কৃতীরা ছেলেটাকে খুন করেছে। এ দিকে, বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশ এসে কাউকে কিছু না জানিয়ে দেহ নিয়ে যাচ্ছিল। তাতেই লোকজন খেপে ওঠে।’’

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শঙ্করী কর্মকার, অর্জুন দে, বিশ্বজিৎ ব্রহ্মদের বক্তব্য, গত এক বছরে এই এলাকায় তিন জন খুন হল। অথচ একজন দুষ্কৃতীও ধরা পড়েনি।’’

পুলিশের দাবি, কুন্তলের মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকার একটি মেয়ে কীটনাশক খেয়েছে। কুন্তলের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে প্রেমের যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন