নোটের অভাবে ইটভাটায় সমস্যা শ্রমিকদের মজুরিতে

নোট বাতিলের প্রায় চল্লিশ দিন পরেও খুচরো টাকার অভাব মিটছে না। বসিরহাটের ইটভাটাগুলি বন্ধ হওয়ার পথে। সমস্যায় পড়েছেন দু’লক্ষেরও বেশি শ্রমিক।

Advertisement

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১৬
Share:

নোট বাতিলের প্রায় চল্লিশ দিন পরেও খুচরো টাকার অভাব মিটছে না। বসিরহাটের ইটভাটাগুলি বন্ধ হওয়ার পথে। সমস্যায় পড়েছেন দু’লক্ষেরও বেশি শ্রমিক। কেউ কেউ দু’হাজারি নোটে মজুরি পেলেও সেই টাকা ভাঙাতে গিয়ে আবার ৩০০ টাকা বাটা গুনতে হচ্ছে!

Advertisement

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট ও বাদুড়িয়া ব্লকের পাঁচশোর উপরে ইটভাটা। মিনাখাঁ, হাড়োয়া, সন্দেশখালি, স্বরূপনগর, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জেও শতাধিক ইটভাটা আছে। শ্রমিকদের মজুরি ২৫০-৩৫০ টাকা। মজুরি মেটাতে সপ্তাহে ভাটা প্রতি লক্ষাধিক টাকা প্রয়োজন। সেটাও ছোট নোটে। কিন্তু তা মিলছে না।

ইটভাটার জন্য কয়লা জরুরি। তার জন্য প্রচুর টাকা দরকার। কয়েকশো লরি চালক, খালাসির মজুরিও দিতে হয়। তা ছাড়া, ইট তোলা, নামানোর জন্য ট্রাক-প্রতি ৪ জন করে শ্রমিক লাগে। খুচরো টাকার অভাবে দীর্ঘ দিন তাঁরা টাকা পাচ্ছেন না। মালিকদের পক্ষে তাঁদের বেতনের টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানালেন অনেকে। মালিকদের কারও কারও কথায়, ‘‘কী ভাবে শ্রমিকদের বেতন দেবো বুঝতে পারছি না। ব্যবসার হাল দিন দিন খারাপ হচ্ছে।’’

Advertisement

পুরপ্রধান তপন সরকার বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক, এটিএম থেকে বেশির ভাগ দু’হাজার টাকার নোট মিলছে। শ্রমিকেরা ওই টাকা নিতে চাইছেন না। এ ভাবে ভাটা চালানো সমস্যার। এ ভাবে ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাবে।’’ একই বক্তব্য বাদুড়িয়ার তারাগুনিয়া ইটভাটার মালিক সমিতির সম্পাদক আয়ূব আলি মণ্ডলের।

উৎপাদনে প্রভাব পড়ায় নির্মাণের কাজও ব্যাহত হচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল জানালেন, ইটের অভাবে আয়লার বাঁধের কাজে সমস্যা হচ্ছে। খুচরোর অভাবে পঞ্চায়েতে উন্নয়নের কাজও বন্ধের মুখে। বড় টাকা খুচরো করতে গিয়ে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গরিব মানুষকে।’’

বসিরহাটের একটি ইট ভাটার শ্রমিক রাজ্জাক মণ্ডলের কথায়, যা পরিস্থিতি হচ্ছে, তাতে হয় তো আর কয়েক দিন পরে ছোট নোটের অভাবে ভাটা ছাড়তে হবে।’’ রাজ্জাকের স্ত্রী আমিনা বিবি বলেন, ‘‘দু’হাজার টাকার ভাঙানি মিলছে না। মালিকের দেওয়া বড় নতুন নোট ভাঙাতে গেলে তিনশো টাকা বাটা দিতে হচ্ছে।’’ রেশমি বিবি, রুহুল আমিন, কনিকা মণ্ডলেরা জানালে, টাকার অভাবে গ্রামে অন্য কাজও নেই। এই পরিস্থিতিতে ক্রমশ অনিশ্তিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন