জ্বরে মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেগঙ্গায়

জ্বরে আক্রান্তদের জন্য স্বাস্থ্য শিবিরের পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের মূল অভিযোগ, প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় মশা দমনের কাজ এলাকার ঠিকমতো হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

জ্বরে ব্যবসায়ীর মৃত্যুর পরে পথ অবরোধ স্থানীয়দের। বৃহস্পতিবার, দেগঙ্গায়। নিজস্ব চিত্র

জ্বরে ফের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এ বার পথে নামল দেগঙ্গা। মৃত ব্যবসায়ী মসিউর রহমানের দেহ সৎকারের পরে তাঁর দুই শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাস্তার উপরে কাঠের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভে নামেন দেগঙ্গার বাসিন্দারা। এর জেরে ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ হয়ে থাকে বেড়াচাঁপা-হাড়োয়া রোড। দুর্ভোগে পড়েন সড়ক এবং রেলপথের যাত্রীরাও।

Advertisement

বারাসত জেলা হাসপাতাল থেকে সেপ্টিসেমিয়া লিখে স্থানান্তর করে দেওয়ার পরে মঙ্গলবার কলকাতার একটি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় মসিউরের। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে, মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গির জীবাণু এনএস-১। বুধবার তাঁর দেহ সৎকারের পরেই বৃহস্পতিবার সকালে হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামে জনতা। জ্বরে আক্রান্তদের জন্য স্বাস্থ্য শিবিরের পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের মূল অভিযোগ, প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় মশা দমনের কাজ এলাকার ঠিকমতো হচ্ছে না। আসমা বিবি, মমতাজ বিবিদের অভিযোগ, ‘‘মশা মারার তেল, ধোঁয়া কেবল বড় রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে।’’

এ দিন অবরোধ তুলতে গেলে দেগঙ্গা থানার পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। অবরোধকারীরা জানান, বিডিওকে পথে নেমে সবার সামনে সমস্ত দাবি মেনে নিতে হবে। পরে দেগঙ্গার যুগ্ম বিডিও ঘটনাস্থলে এসে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সরকারি চিকিৎসা ও অন্যান্য পরিষেবা দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। তবে দেগঙ্গার বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দেগঙ্গা জুড়ে সবর্ত্রই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কাজ চলছে।’’

Advertisement

গত বছর উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় জ্বর আর ডেঙ্গি মহামারীর আকার নেয়। এ বার তাই আগেভাগেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সচেতনতায় নেমেছে প্রশাসন। প্রতিটি গ্রাম সংসদে কমিটি গড়ে মশাবাহিত রোগ রুখতে প্রচার, লিফলেট বিলি করা হয়। কিন্তু তার পরেও রোখা যাচ্ছে না জ্বরের প্রকোপ এবং মৃত্যু। রোগীদের বেসরকারি নার্সিংহোমের বদলে সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচার চালানো হলেও সরকারি হাসপাতাল থেকে মসিউরকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে এ দিন স্লোগানও দেন বিক্ষোভকারীরা।

তীব্র গরমের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পথে নামে মসিউরের দুই শিশুকন্যা। বড় মেয়ে সুরাইয়া সুলতানা প্রশ্ন করে, ‘‘কেন হাসপাতালে বাবার চিকিৎসা হল না? ওখানে কী জ্বরের চিকিৎসা হয় না?’’ তখন দু’চোখ দিয়ে জল পড়ছে পাঁচ বছরের ছোট্ট সুমাইয়ার। সে শুধু বলতে থাকে, ‘‘আব্বু নেই, আমার আব্বু আর নেই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন