কাটমানি ফেরতের প্রতিশ্রুতি, নেতাদের আটকে বিক্ষোভ

গত দু’বছর ধরে ক্যানিংয়ের ইটখোলা পঞ্চায়েতের কৃপাখালি এলাকায় গ্রামবাসীদের সরকারি প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার অন্তত পাঁচজন তৃণমূল নেতা কাটমানি খেয়েছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০২:০২
Share:

আটকে: তৃণমূল নেতারা। —নিজস্ব চিত্র

কাটমানি ফেরতের দাবিতে তিন তৃণমূল নেতাকে আটকে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে ক্যানিংয়ের কৃপাখালি গ্রামে। গ্রামের লোকের দাবি, উত্তম দলুই, রবিরাম মণ্ডল ও মনোরঞ্জন দাস নামে ওই তৃণমূল নেতা কাটমানি ফেরত দেওয়ার কথা মেনে নেন। যদিও এ বিষয়ে ক্যানিং থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

Advertisement

গত দু’বছর ধরে ক্যানিংয়ের ইটখোলা পঞ্চায়েতের কৃপাখালি এলাকায় গ্রামবাসীদের সরকারি প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার অন্তত পাঁচজন তৃণমূল নেতা কাটমানি খেয়েছেন বলে অভিযোগ। কারও কাছ থেকে ৫ হাজার, কারও কাছ থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে উত্তম, রবিরাম, মনোরঞ্জন, প্রশান্ত কয়াল ও দিলীপ দলুইয়ের বিরুদ্ধে। যূথিকা দাস নামে এক গ্রামবাসীর কাছ থেকে ২২ হাজার টাকাও নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

এ বিষয়ে যুথিকা, রবিন দাস, পলাশ দলুইরা বলেন, “টাকা না দিলে ঘর দেবে না বলেছিল। তাই আমরা টাকা দিয়েছি এঁদের।’’ কৃপাখালি গ্রামের ৩৩ জন মানুষের কাছ থেকে সরকারি প্রকল্পের ঘরের বিনিময়ে এই টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকেলে প্রশান্ত ও দিলীপকে না পেলেও স্থানীয় মানুষজন বাকি বাকি তিন নেতাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। একটি মাঠের মধ্যে বসিয়ে রাখা হয় তাঁদের। আগামী দু’মাসের মধ্যে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেবেন বলে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন ওই তিনজন, দাবি গ্রামের মানুষের। প্রায় চার ঘণ্টা আটকে রাখার পরে এরপরে সকলকে ছাড়েন গ্রামের মানুষ।

অভিযুক্তেরা অবশ্য পরে এ নিয়ে মুখ খোলেননি। ইটখোলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান খতিব সর্দার বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা পঞ্চায়েতে এসে জানাতে পারতেন। এ ভাবে তিন তৃণমূল কর্মীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রেখে তাঁদের উপরে অত্যাচার করে জোর করে টাকা ফেরতের কথা লিখিয়ে নেওয়া ঠিক হয়নি।’’ ক্যানিং ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈবাল লাহিড়ি বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা তাঁদের অভিযোগ নিয়ে অবিলম্বে প্রশাসনের কাছে জানান। গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। যদি দলের কোনও কর্মী দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সে জন্য দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পূর্ব) জেলা বিজেপির সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, “পুরো তৃণমূল দলটাই কাটমানি আর দুর্নীতিতে ভরা। ইটখোলা এলাকায় গ্রামবাসীরা যাঁদের ধরেছেন এঁরা তো সব চুনোপুটি। এঁদের আসল মাথা অন্য। কান টানলেই মাথা পাওয়া যাবে।’’ — নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন