বৃক্ষরোপণ: সাজানো হচ্ছে বাগান। নিজস্ব চিত্র
জঞ্জালের পাহাড় সরিয়ে তৈরি হয়েছে বাগান। অরণ্য সপ্তাহে সেখানেই গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছিল পুরসভা। তাতে সাড়া দিয়ে গাছ লাগিয়ে এলাকাটিকে সবুজ করে তুলেছে কচিকাঁচারা। শহরকে জঞ্জালমুক্ত করতে বাগানে বেড়াতে যাওয়া লোকজনকে আরও বেশি করে গাছ লাগানোর আর্জি জানিয়েছে খুদেরাই।
উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার অনেকটা অংশই গঙ্গার ধার বরাবর। এক সময়ে গঙ্গার ধারেই জমা হত শহরের যাবতীয় জঞ্জাল। রোজকার জোয়ার-ভাটার সময়ে সেই জঞ্জাল গিয়ে মিশত গঙ্গায়। সেই ছবিই আরও ভয়াবহ হয়ে উঠত বর্ষাকালে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গঙ্গার দু’পাড়ে সৌন্দর্যায়নের কর্মসূচি নেওয়া হয়। এর ফলে মণিরামপুর এলাকায় জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আশেপাশে একের পর এক বাড়ি তৈরি হওয়ায় জমা জঞ্জালের স্তূপ এক দমবন্ধ করা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা তখন জঞ্জালের স্তূপে বাগান বানানোর প্রস্তাব করেন। উদ্যোগী হয়ে পুরসভাকে সাহায্য করেন তাঁরাই। অবশেষে দেবদ্বারে পুরসভার উদ্যোগে জঞ্জালের স্তূপ ভেঙে তৈরি হয় বাগান। ইতিমধ্যেই সেখানে হাজার পাঁচেকের বেশি গাছ লাগানো হয়ে গিয়েছে। যার অধিকাংশই লাগিয়েছে খুদেরা।
সম্প্রতি অরণ্য সপ্তাহ ঘিরে এলাকায় তারাই দিনভর গাছ লাগানোর কর্মসূচি পালন করল। পাশাপাশি চলল গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার অভিযানও। বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাগানের পাশেই গঙ্গা, পাড় ভাঙছে। সেখানে বাঁশ আর বালির বস্তা দিয়ে ঠেকা দেওয়া হলেও ভাঙন আটকানো যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দা স্বাতী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “গঙ্গার ধারে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বহু জায়গায় আবর্জনা জমে থাকত। সৌন্দর্যায়নের ফলে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়েছে।”
যদিও উদ্যানের পাশে এখনও রয়ে গিয়েছে জঞ্জালের ঢিপি। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ বলেছেন, “জঞ্জাল কোথায় ফেলা হবে, সেটাই আসল সমস্যা। গঙ্গার পাড় বরাবর জঞ্জাল সরিয়ে যে ভাবে উদ্যান তৈরি হয়েছে, সে ভাবেই এক দিন জঞ্জাল মুক্ত হবে শহর। গাছ লাগানোর নেশায় নতুন প্রজন্মই জঞ্জালমুক্ত করবে তাদের বাসস্থান।”
কিন্তু এখন কোথায় যাচ্ছে জঞ্জাল?
মলয়বাবু বলেন, “আপাতত অন্য জায়গায় জমানো হচ্ছে। কম্প্যাক্টরে মণ্ড তৈরি হচ্ছে। আরও গাছ লাগানোর জন্য পুরনো জঞ্জাল সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।”