সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে আলোচনা

মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করুন, বার্তা

প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও পুলিশ কর্তারা মেনে নিচ্ছেন, মধ্যমগ্রামের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা আরও বেশি করে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মানবিক হতে শেখাচ্ছেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

হাবরায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

ভলান্টিয়ার মানে ‘স্বেচ্ছাসেবক’— আর সেটা যেন তাঁরা মনে রাখেন। শাসকের মতো নয়, মানুষের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন।

Advertisement

রবিবার বনগাঁ ও হাবরা থানার আইসিরা নিজেদের থানার সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে কর্মশালা করে এই বার্তাই দিলেন।

শনিবার মধ্যমগ্রামে হেলমেট না পরায় সিভিক ভলান্টিয়ারের হাতে মার খেয়ে সৌমেন দেবনাথ নামে এক স্কুটি চালকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তারপরই নড়েচড়ে বসেছেন জেলার বিভিন্ন থানায় পুলিশ কর্তারা। ভবিষ্যতে ফের যাতে মধ্যমগ্রামের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মানবিক আচরণের পাঠ দেওয়া হচ্ছে। যদিও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে কর্মশালা নতুন নয়। নিয়মিত এমন কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে।

Advertisement

প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও পুলিশ কর্তারা মেনে নিচ্ছেন, মধ্যমগ্রামের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা আরও বেশি করে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মানবিক হতে শেখাচ্ছেন।

এ দিন দুপুরে বনগাঁ থানা চত্বরে প্রায় আড়াইশো সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে আলোচনা করেন থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ। ছিলেন জেলা পরিবহণ সংস্থার সরকারি প্রতিনিধি গোপাল শেঠ। গোপালবাবু সিভিক ভলান্টিয়ারদের বলেন, ‘‘রাস্তায় ডিউটি করতে গিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের আচরণ অনেক সময়ে মেনে নেওয়া যায় না। হেলমেটহীন বাইক ধরার নামে তাঁরা চালকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বাইকের চাবি কেড়ে নেন। তাঁরা যেন মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন।’’ সতীনাথবাবু বলেন, ‘‘মানুষকে মর্যাদা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনারা স্বেচ্ছাসেবক। কোনও মানুষ আপনাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলেও আপনাদের ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।’’

এ দিন হাবরা থানায় ২২২ জন সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে কর্মশালা করেন আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘সড়কে আপনারা কেবল মাত্র যান নিয়ন্ত্রণ করবেন। গাড়ি, বাইক আটক করা আপনাদের কাজ নয়। তা করবেন পুলিশ অফিসার।’’

অনেক সময়ে দেখা যায়, হেলমেটহীন বাইক চালক ধরা পরার ভয়ে দ্রুত বাইক চালিয়ে চলে যান। বনগাঁয় অতীতে এমন ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার পিছু ধাওয়া করেন। ঘটে যায় দুর্ঘটনা। পুলিশ কর্তারা দুর্ঘটনা এড়াতে, এখন থেকে কোনও বাইক চালক না দাঁড়ালে তাঁরা যেন আটকানোর চেষ্টা না করেন। বাইকের নম্বরটি শুধু লিখে নেন।

বনগাঁ-হাবরা এলাকায় কিছু সিভিক ভলান্টিয়ারের আচরণ নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। অভিযোগ, সঙ্গে কোনও পুলিশ অফিসার না থাকলেও তাঁরা বাইক ধরপাকড় করেন। কিছু ক্ষেত্রে টাকা-পয়সা নেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। বনগাঁ শহরের বাটারমোড় এলাকায় যশোর রোডে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের কারও কারও বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ রয়েছে। বাসিন্দাদের কথায়, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়াররা নিজেদের পুলিশ অফিসার মনে করেন। বাইক থামিয়ে চাবি কেড়ে নেওয়া, খারাপ ভাষায় কথা বলা, লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।’’

সিভিক ভলান্টিয়ারদের অনেকেই বললেন, ‘‘কারও কারও খারাপ ব্যবহারের জন্য সকলের বদনাম হচ্ছে। এখন থেকে আমরাও তাঁদের উপরে নজর রাখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন