তালিম: মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল। নিজস্ব চিত্র
কয়েক বছর আগের কথা। ভবানীপুর থেকে অ্যাপ ক্যাবে উঠেছিলেন ঋত্তিকা চন্দ নামে এক মহিলা। যে পথে যাওয়ার কথা, সে পথে না গিয়ে চালক অন্য পথ নেওয়ার চেষ্টা করে। ঋত্তিকা আপত্তি করলে গাড়ির কাচ তুলে গতি বাড়িয়ে দেয়। ঋত্তিকা গাড়ির সিটবেল্ট চালকের গলায় পেঁচিয়ে দেন। উল্টে তাঁকে মারধর করে চালক। এক সময়ে গাড়ি থামতেই কোনও মতে ক্যাব থেকে নামেন ঋত্তিকা। লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পুলিশ এসে গ্রেফতার করে চালককে।
কিন্তু সেই দিনের অভিজ্ঞতা থেকে ঋত্তিকা বুঝেছিলেন, মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল জানাটা কতটা জরুরি। এরপর থেকে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এই কৌশল মেয়েদের শেখান ঋত্তিকা ও তাঁর সংস্থা। তাঁর কথায়, ‘‘বিপদের মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রাখা খুব জরুরি। উপস্থিত বুদ্ধি দিয়েও অনেক বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়।’’ ঋত্তিকার কথায়, ‘‘সামান্য একটা কলমও অনেক সময়ে মেয়েদের আত্মরক্ষার কাজে লাগতে পারে।’’
শনিবার ভাঙড় ১ ব্লক অফিস প্রাঙ্গণে ভাঙড় থানা ও কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ‘উদয় হোক নারী শক্তি’ নামে এক কর্মসূচিতে মহিলাদের আত্মরক্ষার কৌশল নিয়ে তালিম দেওয়া হয়। স্কুল-কলেজের ছাত্রী ও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সাড়ে চারশো মহিলা প্রশিক্ষণ নেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড়ের আইসি সৌগত রায়, ওসি অশোকতরু মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদ সদস্য কাইজার আহমেদ প্রমুখ। প্রশাসন সুত্রে জানানো হয়েছে, এই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবির বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে করা হবে।
মাথার ক্লিপ, পেন, সেফটিপিন-সহ নানা জিনিস দিয়ে কী ভাবে দুষ্কৃতীর চোখে বা গোপন অঙ্গে আঘাত করে নিজেকে বিপদের মুহূর্তে রক্ষা করতে পারে মেয়েরা, সে সব শেখানো হয়। এমন কোনও ঘটনা ঘটলে তা সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে বলারও পরামর্শ দেন প্রশিক্ষকেরা।
এ দিন প্রশিক্ষণ নিতে আসা ভাঙড় কলেজের তিস্তা সরকার, ভাঙড় হাইস্কুলের রওনাক তসলিমারা বলে, ‘‘শিবিরে এসে মনের জোর অনেকটা বেড়ে গেল।’’