—প্রতীকী ছবি।
হিন্দু-মুসলমান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সম্প্রীতির দুর্গোৎসবে মেতেছেন বসিরহাটে।
সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে বসিরহাট নিউ মুন ক্লাবের থিম, সম্প্রীতি ও সংহতি। এখানে শিল্পী মোহনবাঁশি রুদ্রপালের উত্তরসূরি সনাতন রুদ্রপাল প্রতিমা করছেন। সে কথা জানান দিতে শহরের রাস্তার মোড়ে, বাজারে, রিকশার পিছনে সনাতনের মুখের ছবি দিয়ে নানা মাপের ব্যানার, হোর্ডিংয়ে ছেয়ে ফেলা হয়েছে।
সম্প্রতি বাদুড়িয়ার এক বাসিন্দা সোশ্যাল মিডিয়াতে আপত্তিকর ছবি ছড়ানোকে ঘিরে বসিরহাটের বিভিন্ন প্রান্তে গোলমাল শুরু হয়েছিল। দোকান-বাড়িতে আগুন লাগানো থেকে শুরু করে পুলিশের গাড়ি পোড়ানো, বাস-ট্রেন অবরোধের মতো ঘটনা ঘটে। সে সব দিনের কথা মনে করে বসিরহাটের নিউ মুন ক্লাব তাদের ৫০ তম বর্ষে সম্প্রীতির উপরে গুরুত্ব দিয়েছে।
ক্লাব সভাপতি সরিফ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক পিন্টু রায়, প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়রা জানান, বিশ্বাসকে ধরে রাখতে পুজোর এই থিম। ক্লাব ক্লাব সদস্য অনুপম সাহার কথায়, ‘‘বসিরহাটবাসীদের কাছে সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরতে চটের উপরে থার্মোকলের কারুকাজ-সহ মণ্ডপের মধ্যে মডেলের সাহায্যে জাতীয় পতাকা তোলা, রাখি পরানো, ভাইফোঁটা এবং মহিলাদের সন্মান রক্ষা-সহ নানা মাটির মূর্তির সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হবে সম্প্রীতিকে।’’
বাজারপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের সদস্যেরা জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে সম্প্রীতির পুজোয় মেতেছেন। ক্লাব সভাপতি শেখ সহিদুল্লা, যুগ্ম সম্পাদক বিকাশ ভদ্র, বিবেক রায়, সদস্য শেখ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘‘ইদের আনন্দে মেতে ওঠার মতো করেই আমরা হিন্দু-মুসলমান হাতে-হাত মিলিয়ে এ বার ৮০ তম দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছি।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘গোলমালের সময়ে আমরা কোনও রকম ভেদাভেদ না রেখে সর্বতো ভাবে সকলে মিলে চেষ্টা করেছিলাম শান্তি বজায় রাখতে। পুজোর দিনগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও গরিব মানুষদের মধ্যে নতুন পোশাক বিলির মধ্য দিয়ে সেই সম্প্রীতি আরও দৃঢ় করতে উদ্যোগ করেছি।’’ বাজারপাড়া সর্বজনীনের সদস্য শেখ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে আমরা সকলে মিলেমিশে আনন্দ করি। আমরা চাই, সব রকম বিভেদ ভুলে সব সম্প্রদায়ের মানুষ এগিয়ে আসুন বাংলার উৎসবে মাততে।’’