ভাঙাচোরা জেটিঘাট নিয়ে জেরবার মানুষ

জেটির কিছুটা অংশ কংক্রিটের হলেও বেশির ভাগটাই কাঠের। যা ভাঙতে শুরু করেছে। ছোট বনশ্যামনগরের আশা কর্মী সুপ্রিয়া মাইতির কথায়, ‘‘জেটি ভেঙে রয়েছে দীর্ঘ দিন। তাই জোয়ার না আসা পর্যন্ত কংক্রিটের জেটিতে উঠতে গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে অপেক্ষা করতে হয় ঘাটে। অপেক্ষা করতে গিয়েই ওই দুই প্রসূতির বাচ্চার জন্ম হয়েছে নৌকোয়।’’

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০২:২৫
Share:

বেসামাল: ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার। নিজস্ব চিত্র

জুনের শেষের দিকে পাথরপ্রতিমার অশ্বিনী মাইতির ঘাটে নৌকোতেই প্রসব করেছিলেন গঙ্গাপুরের বাসিন্দা মারতি শাসমল।

Advertisement

ফেব্রুয়ারিতে ওই এলাকার শেফালি মাইতিরও ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।

জেটির কিছুটা অংশ কংক্রিটের হলেও বেশির ভাগটাই কাঠের। যা ভাঙতে শুরু করেছে। ছোট বনশ্যামনগরের আশা কর্মী সুপ্রিয়া মাইতির কথায়, ‘‘জেটি ভেঙে রয়েছে দীর্ঘ দিন। তাই জোয়ার না আসা পর্যন্ত কংক্রিটের জেটিতে উঠতে গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে অপেক্ষা করতে হয় ঘাটে। অপেক্ষা করতে গিয়েই ওই দুই প্রসূতির বাচ্চার জন্ম হয়েছে নৌকোয়।’’ বনশ্যামনগর, শ্রীধরনগর, অচিন্ত্যন‌গর এবং জি প্লট পঞ্চায়েতের মানুষ এ ভাবেই থাকেন ভাঙার ভরসায়। বনশ্যামনগর পঞ্চায়েতের মৃদঙ্গভাঙা নদীর ঘাটে ভাঙাচোরা ওই জেটি পেরোতে গিয়ে নাজেহাল হন তাঁরা। আশঙ্কা, যে কোনও দিন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়তে পারে জেটি।

Advertisement

বনশ্যামনগর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুমার মাইতি বলেন, ‘‘নদী ক্রমশ সরে যাচ্ছে। একাধিকবার পঞ্চায়েত জেটি সারাই করেছে। তবে ভাল ভাবে সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েত সমিতি এবং প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’’

হুগলির তেলেনিপাড়ায় দুর্ঘটনার পরেই জেলার ফেরিঘাটগুলি নিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকেও এই বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাও কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

বছর কয়েক আগেও ভাটার সময়ে দীর্ঘপথ কাদা মাড়িয়ে তবে কংক্রিটের জেটিতে উঠতে হত। কিছু দিন আগে পঞ্চায়েত থেকে কাঠের জেটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেটি ভাঙাচোরা হওয়াতেই এই দুর্ভোগ। গড়িয়া থেকে স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতে আসেন মুনমুন সামন্ত। তাঁর কথায়, ‘‘বেশিরভাগ জায়গায় পাটাতন উঠে গিয়েছে বলে এক পাশ দিয়ে সাবধানে নৌকোয় উঠতে হয়। তাতে অনেকটা সময় চলে যায়। কখনও ট্রেন মিস হয়, কখনও দেরিতে স্কুলে পৌঁছই।’’

যাত্রীরা জানান, প্রতিনিয়ত কোনও না কোনও যাত্রীর পা ঢুকে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। সোমবার পাথরপ্রতিমায় বাজার বসে। সে সময়ে প্রচুর লোক ওই নড়বড়ে জেটিতে ওঠে। এ ভাবে যে কোনও দিন বিপদ ঘটতে পারে। নদীর দিকে থাকা জেটির কাঠের শেষ অংশটুকু ভাঙা। ফলে জোয়ারের জল না এলে জেটি ব্যবহারই করা যায় না।

কিন্তু এ সব তথ্য নাকি অজানা পাথরপ্রতিমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামা বিশ্বাসের। তিনি জানেনই না, জেটির বেশির ভাগটাই কাঠের। তাঁর কথায়, ‘‘অশ্বিনী মাইতি ঘাটে আবার কাঠের জেটি কোথায়, ওখানে কংক্রিটের জেটি রয়েছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন