COVID-19

বাড়ছে রোগীর চাপ, শয্যা বৃদ্ধি নৈহাটির সেফ হোমে

গত ৩০ এপ্রিল মাত্র ২২টি শয্যা নিয়ে নৈহাটির বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়ামে ওই সেফ হোম চালু করেছিল নৈহাটি পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৬:২০
Share:

নৈহাটির বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়াম সেফ হোমে ক্রমশ চাপ বাড়ছে করোনা রোগীর। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় দু’সপ্তাহের মধ্যে সেফ হোমে শয্যা-সংখ্যা বাড়াতে বাধ্য হল নৈহাটি পুরসভা। গত ৩০ এপ্রিল মাত্র ২২টি শয্যা নিয়ে নৈহাটির বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়ামে ওই সেফ হোম চালু করেছিল নৈহাটি পুরসভা। কিন্তু ক্রমাগত রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় সেখানকার শয্যা-সংখ্যা বাড়িয়ে ২৭০ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেফ হোম চালানোর বিপুল খরচ নিয়েও চিন্তিত নৈহাটি পুরসভা।

Advertisement

বরাহনগর থেকে বীজপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ব্যারাকপুর মহকুমা। করোনা পরীক্ষার সরকারি হিসেব অনুযায়ী, সেখানে হাজার দুয়েক মানুষ ইতিমধ্যেই আক্রান্ত বলে খবর। প্রতিদিনই ৭০ থেকে ৮০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রায় প্রতিটি পুর এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল হচ্ছে স্থানীয় পুরসভাগুলি।

এই অবস্থায় নৈহাটি তো বটেই, ব্যারাকপুর, উত্তর ব্যারাকপুর, ভাটপাড়া এবং হালিশহরের মতো পুরসভাগুলিও নৈহাটির বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়ামের ওই সেফ হোমের উপরে অনেকাংশে নির্ভর করছে। ঘন বসতিপূর্ণ ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অনেক জায়গাতেই ছোট ছোট ঘরে একাধিক মানুষের বসবাস। ফলে পরিবারের এক জন সংক্রমিত হলে বাকিদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে।

Advertisement

নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘বাড়িতে ছোঁয়াচ এড়িয়ে বসবাসের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলে আমরা আগে গিয়ে পরিবারের সংক্রমিত ব্যক্তিকে সেফ হোমে তুলে আনছি। যাতে বাকি সদস্যেরা সুরক্ষিত থাকেন। ওই রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।’’

নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফে একটি সংস্থাকে ওই সেফ হোমে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। সেখানে বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরি করা হবে। ওই প্লান্ট চালু হলে সেফ হোমটি পুরোদস্তুর স্বনির্ভর হতে পারবে বলেই মনে করছেন নৈহাটি পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়ামে ওই সেফ হোমের শয্যা-সংখ্যা ৫০০ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। তবে তার বেশি করা যাবে না।

খড়দহ, ব্যারাকপুর, টিটাগড়ের মতো কয়েকটি জায়গায় অবশ্য বেশ কয়েকটি সেফ হোম ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই অক্সিজেন-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। খড়দহ পুরসভা যে ৬৪টি শয্যার সেফ হোম চালাচ্ছে, সেখানেও অক্সিজেনের জোগান অব্যাহত রাখাটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই পুরসভার মুখ্য আধিকারিক সুশান্ত মণ্ডল বললেন, ‘‘সিলিন্ডার পেতে সমস্যা হচ্ছে। আপাতত ২০টি সিলিন্ডার জোগাড় করা গিয়েছে। সেফ হোমের রোগী ছাড়াও অন্য কারও প্রয়োজন পড়লে সাধ্য মতো অক্সিজেন পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ ওই সেফ হোমে চিকিৎসকেরও প্রয়োজন রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

পরিস্থিতির মোকাবিলায় এ মাসের শেষের দিকে ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে ১০০ শয্যার একটি কোভিড হাসপাতাল চালু হওয়ার কথা। ওই স্টেডিয়ামে ৩০টি শয্যার সেফ হোম তৈরি করা হয়েছিল। ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী জানান, ওই জায়গাতেই হাসপাতালটি তৈরি করা হচ্ছে। টিটাগড়ে আরও একটি ১৫০ শয্যার হাসপাতাল তৈরির জন্য সিইএসসি-র একটি পরিত্যক্ত অতিথিশালাকে বাছা হয়েছে। ব্যারাকপুরে এখন প্রতিদিন ৭০-৮০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে খবর মিলেছে স্থানীয় পুর প্রশাসনের তরফে। রাজ বলেন, ‘‘অক্সিজেন প্লান্টের ব্যবস্থা রেখেই হাসপাতালগুলি চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যারাকপুর-টিটাগড়ের মতো এলাকায় জায়গার অভাবের কারণেই হাসপাতাল চালু করার ক্ষেত্রে সময় লাগছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement