সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, ভ্যাকসিন অপ্রতুল, খুলছে বন্ধ থাকা সেফ হোম
coronavirus

দৈনিক আক্রান্ত হাজার পেরোল

বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। রবি ও সোমবার দু’দিনে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৮
Share:

ভিড়ে-ঠাসা: চৈত্র সেলের বাজারে উধাও মাস্ক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

গোটা রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উত্তর ২৪ পরগনাতেও করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরাল হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০৮৭ জন। রবিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৪৭ জন। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৫৯৫৫ জন। অথচ মার্চের শুরুতে জেলায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল পঞ্চাশের আশেপাশে।

Advertisement

বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। রবি ও সোমবার দু’দিনে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বার বার নিয়ম মানার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তবে এই পরিস্থিতিতেও যথারীতি সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে বহু মানুষের মধ্যে। রাস্তাঘাটে, বাজারে মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে না অনেককেই। মানা হচ্ছে না দূরত্ববিধিও। রাজনৈতিক নেতানেত্রীরাও বিধি মানছেন না অধিকাংশ ক্ষেত্রে। অনেকেই প্রতিষেধক নিয়ে ফেলেছেন, এই যুক্তিতে বিধি ভাঙছেন। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতিষেধক শরীরে ৭০ শতাংশ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারছে। তাই প্রতিষেধক নিলেও মাস্ক অবশ্যই পরা উচিত। অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধিও একই ভাবে মেনে চলতে হবে। এই পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নতুন করে সেফ হোমগুলি প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা থেকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলায় আগে ২২টি সেফ হোম ছিল। করোনার প্রকোপ এক সময়ে কমে আসায় বেশিরভাগ সেফ হোম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন নতুন করে সংক্রমণ বাড়ায় সেফ হোমগুলিকে ফের প্রস্তুত করা হচ্ছে। জেলায় ৮টি করোনা হাসপাতালে ছিল। সাতটি হাসপাতালকে ইতিমধ্যেই করোনা রোগী ভর্তি করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। রোগী ভর্তি হওয়া শুরুও হয়েছে।

Advertisement

করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। মার্চ মাসে দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যাটা নেমে এসেছিল দু’হাজারের নীচে। এখন সেখানে রোজ সাড়ে চার হাজার থেকে সাড়ে ছ’হাজার করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের তরফে করোনা পরীক্ষা করাতে মানুষকে বার বার সচেতন করা হচ্ছে। এরপরেও অনেকে উপসর্গ নিয়েও করোনা পরীক্ষা করাতে চাইছেন না।”

করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের সাক্ষাৎ বন্ধ করা হয়েছে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সোমবার এই বিষয়ে নোটিস দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। সে কারণেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

জেলায় সর্বত্র ভ্যাকসিন সরবরাহ স্বাভাবিক নয় বলে অভিযোগ উঠছে। প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন না থাকায় কোভিড টিকাকরণ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোবরডাঙা পুরসভা। মঙ্গলবার পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। পুরপ্রশাসক সুভাষ দত্ত বলেন, “ভ্যাকসিন সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় মঙ্গলবার থেকে প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আশা করছি শুক্রবার থেকে আবার প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন