Coronavirus in West Bengal

ভাঙড়ে করোনার প্রকোপ, আক্রান্ত সরকারি কর্মচারী

প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ভাঙড় ২ ব্লকে প্রায় ৩৬ জন, এবং ভাঙড় ১ ব্লকে ২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন এলাকায় মাইকে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ০৫:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্লক অফিসে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে বেরোনোর পরেই জানা গেল, বৈঠকে উপস্থিত পঞ্চায়েতের এক আধিকারিক করোনা আক্রান্ত। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড় ২ ব্লক অফিসে।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের বছর বিয়াল্লিশের ওই অফিসার জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন। ওষুধ খাওয়ার পরে জ্বর কমেও গিয়েছিল। ওই সময় নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তিনি এ দিন চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েত অফিসে এবং ভাঙড় ২ ব্লক অফিসে প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক থেকে বেরোনোর পরেই রিপোর্ট আসে, করোনা পজ়িটিভ। মঙ্গলবার থেকে আপাতত তিন দিনের জন্য ব্লক অফিস-সহ ওই চত্বরের মধ্যে অন্যান্য সরকারি অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র দফতরের নিজস্ব কাজ হবে। জনসাধারণকে ব্লক অফিসে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। তবে আমপানে ক্ষতিগ্রস্তেরা ব্লক অফিসের মূল গেটের সামনে আবেদনপত্র জমা করে যেতে পারবেন।

বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, ‘‘আপাতত ব্লক অফিস জীবাণুমুক্ত করতে রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে। দফতরের কর্মীদের লালারসের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, পঞ্চায়েতের একজন সরকারি কর্মচারীর করোনা ধরা পড়েছে। তিনি অসুস্থ থাকায় অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। তারপরেও তিনি এ দিন অফিসে আসেন। আমাদের সকলের সঙ্গে বৈঠকও করেন। এখন যা পরিস্থিতি, তিনি যাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তাঁদের সকলেরই লালারসের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।’’

Advertisement

ভাঙড় ১ ব্লক এলাকার দু’জন আশাকর্মীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। গত দু’দিনে ওই ব্লকে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন দশজন। এঁদের মধ্যে একাধিক প্রসূতিও রয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ভাঙড় ২ ব্লকে প্রায় ৩৬ জন, এবং ভাঙড় ১ ব্লকে ২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন এলাকায় মাইকে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।

এ দিকে, সোমবার চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের ওই আধিকারিকের সংস্পর্শে আসা অনেক রাজনৈতিক নেতা মঙ্গলবার এলাকায় ঘুরেছেন বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। অবিলম্বে তাঁদের লালারসের পরীক্ষা করা এবং নিভৃতবাসে থাকার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন অনেকে। প্রশাসন জানিয়েছে, করোনা আক্রান্ত ওই সরকারি কর্মচারীর সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই লালারসের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অন্য দিকে, হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি কলকাতায়। ২৪ জুন শেষবার হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁর এক আত্মীয়ের জ্বর আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে কাজে আসতে নিষেধ করে দিয়েছিল। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ওই চিকিৎসকের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট জানতে পেরেছি। তিনি পজ়িটিভ।’’

দেগঙ্গা বিডিও দফতরের নির্বাচন দফতরের এক আধিকারিকের করোনাপজ়িটিভ মেলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অন্য কর্মীদের মধ্যে। মঙ্গলবার সকালে বিডিও অফিস স্যানিটাইজ় করা হয়। এর পাশাপাশি বেড়াচাঁপার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যাঙ্কটি বন্ধ করে দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয়। ওই ব্যাঙ্কের সমস্ত কর্মী ও আধিকারিকদের গৃহ নিভৃতবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ব্যারাকপুর কোভিড হাসপাতালে ভর্তি এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেগঙ্গায়। পুলিশ জানিয়েছে, দেগঙ্গার কলসুর শেখের মোড় এলাকায় ওই ব্যক্তি এবং কয়েকজন আত্মীয়ের জ্বর, কাশিতে হয়েছিল। সোমবার সকালে কোভিড হাসপাতালে ওই ব্যক্তির লালারস পরীক্ষার জন্য নেওয়ার পরে রিপোর্ট আসার আগেই বিকেলে মৃত্যু হয় খসরুলের। পেশায় ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তির সঙ্গে বহু ক্রেতা সংস্পর্শে এসেছিলেন। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। মঙ্গলবার সুনসান ছিল বাজার এলাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন