Potato Price

ফলন কম, বাজারে চড়ছে আলুর দাম

পরিবেশ বিমুখ না হলে পশ্চিমবঙ্গে ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই ‘জলদি’ প্রজাতির আলু বাজারে চলে আসে। এই আলু হিমঘরে সংরক্ষণযোগ্য নয়। সরাসরি তা বাজারে চলে আসায় জোগানে ভারসম্য থাকে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ০৬:৫৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

হঠাৎ করে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। সোমবার বিভিন্ন বাজারে চন্দ্রমুখী আলুর কেজিপ্রতি দাম ছিল ৩২ টাকা। জ্যোতি আলু ২৮ টাকায় বিকিয়েছে। দামের ঠেলায় চিন্তায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ব্যবসায়ীদের একাংশ মনে করছেন, দাম আরও বাড়বে। বাঙালির হেঁশেলে আলুর অনুপস্থিতির কথা ভাবাই যায় না! দাম বাড়লে আরও সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

পরিবেশ বিমুখ না হলে পশ্চিমবঙ্গে ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই ‘জলদি’ প্রজাতির (চাষে কম সময় লাগে) আলু বাজারে চলে আসে। এই আলু হিমঘরে সংরক্ষণযোগ্য নয়। সরাসরি তা বাজারে চলে আসায় জোগানে ভারসম্য থাকে। পরে পর্যায়ক্রমে জ্যোতি এবং চন্দ্রমুখী জমি থেকে ওঠে। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত খেত থেকে আলু সরাসরি বাজারে আসায় দাম তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। এই বছর আলুর দাম মরসুমের শুরুতে ২০-২২ টাকা কেজিতে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু গত দিন দশেক ধরে তা হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে।

কেন?

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মহলে খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, চলতি মরসুমে রাজ্যে আলু উৎপন্ন হয়েছে ৬৩ লক্ষ টন। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ৬৮ লক্ষ টন। উৎপাদন কম হওয়ায় এ বার রাজ্যের হিমঘরগুলির মাত্র ৭৮ শতাংশ ভর্তি হয়েছে। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই হিমঘর খুলে গিয়েছে। মাঠ থেকে সরাসরি বাজারে আলু আসছে না। সেই কারণেই দাম বাড়ছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। তাঁদের যুক্তি, হিমঘরের ভাড়া, আলু বাছাইয়ের খরচ, বাছাইয়ের সময় আলু বাদ যাওয়া এবং পরিবহণ খরচ মিলিয়েই দাম বেশি হয়ে যাচ্ছে। সোমবার পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি জ্যোতি আলুর দাম ২৫ টাকা এবং চন্দ্রমুখীর দাম ২৮ টাকা ছিল। সেই হিসাবেই খোলা বাজারে দাম চড়েছে।

রাজ্যের অন্যতম আলু উৎপাদক জেলা হুগলি। তারকেশ্বরের রামনগরের আলুচাষি অনুপ ঘোষ জানান, তিনি ১০ বিঘে জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু নিম্নচাপের কারণে এ বার আলুর ফলন ভাল হয়নি। বহু চাষির জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আলু অনেকে ঘরে তুলতেই পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘অন্যান্য বার বিঘেতে ১০০ বস্তা আলু হয়। এ বার ৮০ বস্তা পেয়েছি। অনেক চাষি তাও পাননি।’’

রাজ্যের প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এ বার রাজ্যে আলুর উৎপাদন অত্যন্ত কম। সেই কারণে আগামিদিনে দাম আরও বাড়বে বলে আমাদের আশঙ্কা। রাজ্যের হিমঘরগুলি সাধারণত এপ্রিলের শেষ থেকে খোলে। এ বার কিছু দিন আগে খুলেছে। মাঠ থেকে নয়, হিমঘর থেকে আলু বাজারে যাওয়ায় আনুষঙ্গিক খরচের কারণেই দাম বেশি পড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন