প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণের ভয়ে করোনায় মৃত বসন্ত রায়ের দেহ ছুঁতে চাননি কেউ। আটকে গিয়েছিল সৎকার। শেষে কয়েকজনকে সঙ্গীকে নিয়ে দেহ দাহ করলেন স্থানীয় বাসিন্দা সফি কামাল মোল্লা। বৃহস্পতিবার সম্প্রতির এমন নিদর্শনের সাক্ষী থাকল স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী নির্মাণ গ্রামের মানুষ।
স্বরূপনগরের শাঁড়াপুল পঞ্চায়েতের নির্মাণ গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর বসন্ত রায়-সহ তাঁর পরিবারের কয়েকজন দিন কয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হন। বাড়িতেই নিভৃতবাসে ছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে বসন্তের মৃত্যু হয়। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ে পড়শিদের কেউই বসন্তের দেহ ছুঁতে চাননি। খবর পেয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা সফি কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে এগিয়ে আসেন। তাঁরাই ঘর থেকে দেহ বের করে পলিথিনে মুড়ে শ্মশানে নিয়ে যান। সেখানেই নিয়ম মেনে বসন্তের সৎকার হয়।
ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তে সফি এবং তাঁর সঙ্গীদের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মামনি গাইনের স্বামী মানস গাইন বলেন, “জনপ্রতিনিধি হিসেবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি মৃতদেহ সৎকারের জন্য কেউ আসতে চাইছেন না। সমস্যায় পড়ে যায় পরিবার। শেষে সফিকে ফোন করে জানাতেই তিনি কয়েক জনকে নিয়ে চলে আসেন।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা কর বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের একজনের দেহ সৎকারের জন্য সংখ্যালঘু ভাইরা যেভাবে এগিয়ে এলেন, ওদের সাধুবাদ জানাই।”
সফি বলেন, “আসলে করোনায় স্থানীয় মানুষ এতটাই ভীত হয়ে পড়েছেন যে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মানুষ হয়ে মানুষের কাজে লাগতে পেরে
ভাল লাগছে। আমাদের সম্প্রীতির দেশ। আমরা যেন মানুষের বিপদে জাতি-ধর্মের উর্দ্ধে উঠে কাজ করতে পারি।”