আশ্রয়ের খোঁজে সুন্দরবন

ফণীর প্রভাবে শুক্রবার সকাল  থেকে জোরে হাওয়া বইতে শুরু করে। বৃষ্টিও হচ্ছিল মুষলধারে। নদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে। ২০০৯ সালে আয়লার আতঙ্ক এখনও ভুলতে পারেননি এই এলাকার মানুষজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০১:২৩
Share:

রওনা: বোঁচকাপত্তর নিয়ে মানুষ চলেছেন ফ্লাড সেন্টারের দিকে। ছবি: নির্মল বসু

নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবন এলাকার বহু মানুষকে। তাঁদের ঠাঁই হয়েছে ফ্লাড সেন্টার, স্কুলঘরে। পর্যাপ্ত খাবার, জল, ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। বিভিন্ন জায়গায় কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।

Advertisement

ফণীর প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে জোরে হাওয়া বইতে শুরু করে। বৃষ্টিও হচ্ছিল মুষলধারে। নদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে। ২০০৯ সালে আয়লার আতঙ্ক এখনও ভুলতে পারেননি এই এলাকার মানুষজন। সে বার অবশ্য প্রশাসনের এমন প্রস্তুতি ছিল না বলেই জানালেন অনেকে।

সন্দেশখালির ন্যাজাট ১ ব্লকের কালীনগর, শেহেরা, রাধানগর, বাউনিয়া, হাটগাছিয়া, বয়ারমারি এলাকায় নদী-সংলগ্ন মাটির বাড়িতে থাকা মানুষজনকে ভোলাখালি ফ্লাড সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সন্দেশখালি ২ ব্লকের রায়মঙ্গল নদীর তীরবর্তী এলাকা খুলনা, মণিপুর থেকে প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ধামাখালি, সন্দেশখালি এবং তুষখালি-সহ সুন্দরবন-লাগোয়া সমস্ত নদীতে নৌকো চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে মানুষ যাতে ভেসেল পরিষেবা পেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আয়লার ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখে আমরা এ বার আগাম সতর্কতা নিয়েছি। হাসনাবাদ ব্লকে ভ্রাম্যমান জলশোধন প্রক্রিয়াকরণ গাড়ি এনে পরিস্রুত পানীয় জল তৈরি করা হচ্ছে।’’ হাসনাবাদ ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ফ্লাড সেন্টারে।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্বল বাঁধ সনাক্ত করে বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের শতাধিক কর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে কয়েকটি বাঁধের অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছে। বিভিন্ন পঞ্চায়েত শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। পৌঁছে দেওয়া হয়েছে জলের পাউচ। হাসনাবাদেও বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে তৈরি রাখা হয়েছে। একই ভাবে বসিরহাট শহর এবং পঞ্চায়েত এলাকায় নদী পারের বাসিন্দা এবং মাটির বাড়িতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফণীর আতঙ্কে এ দিন শহর-গ্রামে হাট-বাজার প্রায় বন্ধ ছিল। রাস্তায় গাড়ি চলেছে কম। পথচারীও তেমন চোখে পড়েনি। দিনভর টিভির পর্দায় চোখ রেখেছেন মানুষজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন